উত্তর ত্রিপুরায় ফের সক্রিয় জঙ্গি সংগঠন, আগ্নেয়াস্ত্র সহ ধৃত কট্টর জঙ্গি নেতা!
উত্তর ত্রিপুরার আনন্দবাজার এলাকায় বড়সড় সাফল্য পুলিশের। আগ্নেয়াস্ত্র ও গোলাবারুদসহ এক কট্টর জঙ্গি সংগঠনের নেতাকে গ্রেপ্তার করল জেলা পুলিশের একটি বিশেষ দল। গোপন সূত্রে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ভারত-বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সীমান্তবর্তী ভান্ডারিমার সেতুদুয়ার জঙ্গলে অভিযান চালিয়ে তাকে পাকড়াও করা হয়। ধৃতের নাম অনিদা রিয়াং (৩৫), যিনি একসময় নিষিদ্ধ ঘোষিত এন.এল.এফ.টি (NLFT) জঙ্গি সংগঠনের সক্রিয় সদস্য ছিলেন। বর্তমানে সে ‘ত্রিপুরা ইউনাইটেড ন্যাশনাল ফ্রন্ট’ (TUNF) নামে এক নতুন সশস্ত্র জঙ্গি সংগঠনের নেতা।
বিশেষ সূত্রে জানা গেছে, আনন্দবাজার থানার অধীনস্থ ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের গহীন জঙ্গলে টংঘরের ভিতরে আত্মগোপন করেছিল অনিদা। দীর্ঘ পরিকল্পনা ও নজরদারির পর শনিবার রাতে পুলিশের বিশেষ বাহিনী অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করে। তার কাছ থেকে উদ্ধার হয় একটি অত্যাধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র, একাধিক লাইভ কার্তুজ, এবং চাঁদা আদায়ের রশিদ বই।
ধৃত জঙ্গির বিরুদ্ধে আনন্দবাজার থানায় একাধিক গুরুতর মামলা রুজু হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে—পুলিশ ও সীমান্তরক্ষীকে হত্যার চেষ্টা, অপহরণ, ঠিকাদারদের ভয় দেখিয়ে চাঁদা আদায়, অস্ত্র আইন লঙ্ঘন, এবং ভারতীয় দণ্ডবিধির একাধিক ধারা। ধৃতকে কড়া নিরাপত্তায় কাঞ্চনপুর মহকুমা আদালতে পেশ করে চারদিনের পুলিশি রিমান্ডের আবেদন জানানো হয়। এস.ডি.জে.এম আদালত সেই আবেদন মঞ্জুর করে। বর্তমানে পুলিশ তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে আরো গোপন তথ্য উদ্ধারের চেষ্টা চালাচ্ছে।
পুলিশ সূত্রে খবর, ওই এলাকায় আরও বেশ কয়েকজন জঙ্গির লুকিয়ে থাকার আশঙ্কা রয়েছে। তাই গোটা সীমান্ত অঞ্চলে জোর তল্লাশি ও নজরদারি চালানো হচ্ছে। এই ঘটনায় গোটা উত্তর ত্রিপুরা জেলাজুড়ে তীব্র চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। অনেকেই মনে করছেন, মাঝে মধ্যে কিছু জঙ্গি সরকারের কাছে আত্মসমর্পণ করলেও এখনো সীমান্তবর্তী গভীর জঙ্গলে সক্রিয় রয়েছে কট্টর জঙ্গি সংগঠনের নেতারা। পুলিশ ও গোয়েন্দা মহল মনে করছে, এই ঘটনার মাধ্যমে আবারো প্রমাণিত হলো যে জঙ্গিদের কার্যকলাপ এখনো পুরোপুরি নির্মূল হয়নি।
উল্লেখ্য, ত্রিপুরার উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সীমান্ত এলাকা দীর্ঘদিন ধরেই জঙ্গি কার্যকলাপের আখড়া হিসেবে পরিচিত। ফলে এই গ্রেফতার ভবিষ্যতে বড় কোনো হামলা রোখার দিকেও এক বড় পদক্ষেপ হিসেবে দেখছে প্রশাসন।