রোহিঙ্গা নাগরিকের অনুপ্রবেশ কৈলাসহরে

বাংলাদেশ থেকে দুই রোহিঙ্গা নাগরিক ভারতে প্রবেশের মুখে আটক!

গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কৈলাসহর থানার পুলিশ দুইজন বাংলাদেশী নাগরিককে আটক করেছে। শহর এলাকায় অবৈধ অনুপ্রবেশের ঘটনায় গোটা কৈলাসহরে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে। কৈলাসহর থানার ওসি সুকান্ত সেন চৌধুরী জানান, ৩রা এপ্রিল বৃহস্পতিবার ভোরবেলা দুই বাংলাদেশী  নাগরিক অবৈধভাবে ভারত-বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সীমান্ত পার হয়ে কৈলাসহরে প্রবেশ করে। তারা কৈলাসহর থেকে বহিরাজ্যে যাওয়ার উদ্দেশ্যে একটি অটোতে ওঠে। ধর্মনগরের উদ্দেশ্যে রওনা হওয়ার সময় কৈলাসহর শহরের কলেজের পাশে পুলিশ সন্দেহজনক অটোটি আটক করে তল্লাশি চালায়। এই তল্লাশিতে দুই বিদেশি নাগরিকসহ অটো চালককে গ্রেপ্তার করা হয়।

অবৈধ অনুপ্রবেশের কারণে পুলিশ ধৃতদের বিরুদ্ধে পাসপোর্ট আইনে মামলা দায়ের করেছে। বর্তমানে ধৃত তিনজনকেই কৈলাসহর থানার হেফাজতে রাখা হয়েছে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, আটককৃত দুই বিদেশি নাগরিক আদতে বাংলাদেশের রোহিঙ্গা। এই আটকৃতদের কাছ থেকে তিনটি দামি মোবাইল ফোন ও কিছু নগদ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়া, যে অটো গাড়িটি তারা ব্যবহার করছিল সেটিও পুলিশ জব্দ করেছে। পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ধৃত দুইজন রোহিঙ্গা নাগরিক জানিয়েছে যে, তারা বাংলাদেশের চট্টগ্রামের রিফিউজি ক্যাম্প থেকে পালিয়ে এসেছে। আটককৃতদের মধ্যে মোহাম্মদ তাসিন (১৮) ও মোহাম্মদ উসমান (১৯) নামে দুই রোহিঙ্গা নাগরিক রয়েছেন। এছাড়া, ধৃত অটো চালকের নাম আমিনুল হক (২৬), যার বাড়ি কৈলাসহরের বাবুরবাজার এলাকায়।

পুলিশ আরও জানিয়েছে, রোহিঙ্গা নাগরিকরা কীভাবে আন্তর্জাতিক সীমান্ত পার হয়েছে, তাদের ভারতে আসার উদ্দেশ্য কী, এবং তারা কার মাধ্যমে এ দেশে প্রবেশ করেছে, এসব বিষয়ে জোরালো তদন্ত চলছে। বিকেলে ধৃতদের কৈলাসহর আদালতে হাজির করা হয়েছে। এভাবে শহরের কেন্দ্রস্থল থেকে রোহিঙ্গা নাগরিক আটক হওয়ার ঘটনায় স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। বিষয়টি নিয়ে পুলিশ ও প্রশাসন আরও কঠোর নজরদারি চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।About Us

পশ্চিমবঙ্গে ১০৩২৩ এর প্রতিচ্ছবি

পশ্চিমবঙ্গের SSC নিয়োগ দুর্নীতিতে হাইকোর্টের রায়কেই প্রায় মান্যতা দিল সুপ্রিম কোর্টে!

পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষা জগতে এক নজিরবিহীন ঘটনা ঘটেছে, যা ত্রিপুরার ১০৩২৩ শিক্ষকের মামলার সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ। ২০১৬ সালের স্কুল সার্ভিস কমিশন (SSC) নিয়োগ প্রক্রিয়ায় দুর্নীতির অভিযোগে কলকাতা হাইকোর্ট প্রায় ২৫,৭৫৩ শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মীর নিয়োগ বাতিল করেছে। এই রায়ের বিরুদ্ধে রাজ্য সরকার সুপ্রিম কোর্টে আপিল করলেও, শীর্ষ আদালত হাইকোর্টের রায়কেই বহাল রেখেছে।

২০১৬ সালের এসএসসি পরীক্ষায় ওএমআর শিটের জালিয়াতির মাধ্যমে অবৈধ নিয়োগের অভিযোগ ওঠে। এই বিষয়ে তদন্তের জন্য কলকাতা হাইকোর্ট সিবিআইকে দায়িত্ব দেয়। সিবিআই এই তদন্তে নেমে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়সহ একাধিক এসএসসি কর্মকর্তার জড়িত থাকার প্রমাণ মেলে, যার ফলে তাদের গ্রেফতার করা হয়।

আদালতের নির্দেশনা ও পরবর্তী পদক্ষেপ অনুযায়ী;

  • প্যানেলের মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পরেও যারা চাকরি পেয়েছেন বা করছেন, তাদের ৪ সপ্তাহের মধ্যে বেতন ফেরত দিতে হবে।
  • ৬ সপ্তাহের মধ্যে জেলা শাসকদের সেই টাকা উদ্ধার করতে হবে।
  • নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত সমস্ত তদন্ত করবে সিবিআই, এবং প্রয়োজনে যেকোনো ব্যক্তিকে হেফাজতে নিতে পারবে।
  • অতিরিক্ত শূন্য পদ যারা তৈরি করেছিল, তাদেরও হেফাজতে নিতে পারবে সিবিআই।
  • সমস্ত ওএমআর শিট পুনরায় মূল্যায়ন করা হবে।
  • সবকটি ওএমআর শিটের কপি অনলাইনে আপলোড করার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
  • নতুন করে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করতে বলা হয়েছে এসএসসিকে।

এই দুর্নীতির ফলে অনেক যোগ্য প্রার্থী, যারা মেধার ভিত্তিতে চাকরি পেয়েছিলেন, তাদেরও চাকরি হারাতে হয়েছে। এতে তারা ও তাদের পরিবার গভীর হতাশায় নিমজ্জিত। প্রশ্ন উঠছে, যারা মেধার ভিত্তিতে চাকরি পেয়েছিলেন, তাদের চাকরি হারানোর জন্য দায়ী কে? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজছেন দুই-তৃতীয়াংশ চাকরিপ্রার্থী ও তাদের পরিবার। ত্রিপুরায় ১০৩২৩ শিক্ষকের নিয়োগ বাতিলের ঘটনা যেমন শিক্ষা ব্যবস্থায় গভীর প্রভাব ফেলেছিল, পশ্চিমবঙ্গের এই ঘটনা তেমনই শিক্ষাক্ষেত্রে ন্যায়বিচার ও স্বচ্ছতার প্রশ্ন তুলে ধরেছে। উভয় ক্ষেত্রেই মেধাবী প্রার্থীদের প্রতি অবিচার ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের প্রয়োজনীয়তা স্পষ্ট হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে, মেধাবী ও যোগ্য প্রার্থীদের স্বার্থ রক্ষা এবং ভবিষ্যতে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি বলে মনে করছেন শিক্ষাবিজ্ঞ, মহল।About Us