শিক্ষার্থীদের স্বার্থে বীরচন্দ্র লাইব্রেরী

শিক্ষার্থীদের জন্য সেন্ট্রাল লাইব্রেরী সপ্তাহে ৭ দিন!

শিক্ষার্থীদের একাডেমিক ও পেশাগত উন্নতির কথা মাথায় রেখে ত্রিপুরা সরকার উচ্চশিক্ষা দফতরের নির্দেশে একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। নতুন বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, বীর চন্দ্র স্টেট সেন্ট্রাল লাইব্রেরীর ক্যারিয়ার গাইডেন্স সেকশনের পাঠাগার কক্ষ এখন থেকে সপ্তাহের সাত দিন খোলা থাকবে। ফলে পড়ুয়ারা, গবেষকরা এবং প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতিপ্রার্থীরা যেকোনো দিন লাইব্রেরীর এই সুবিধা গ্রহণ করতে পারবেন।

আগে লাইব্রেরীর ক্যারিয়ার গাইডেন্স সেকশন সপ্তাহে ছয় দিন খোলা থাকত এবং সোমবার এটি বন্ধ থাকত। কিন্তু নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এই সেকশনটি এখন সোমবারেও খোলা থাকবে। তবে লাইব্রেরীর অন্যান্য পরিষেবা বিভাগগুলোর ক্ষেত্রে সোমবারের ছুটি বহাল থাকবে। অর্থাৎ, শুধুমাত্র ক্যারিয়ার গাইডেন্স সেকশনের পাঠাগার কক্ষই সপ্তাহের প্রতিদিন খোলা থাকবে, অন্য পরিষেবাগুলি আগের নিয়ম অনুযায়ী সোমবার বন্ধ থাকবে। বীর চন্দ্র স্টেট সেন্ট্রাল লাইব্রেরী ত্রিপুরার অন্যতম প্রধান গণগ্রন্থাগার, যেখানে রয়েছে বিশালসংখ্যক বই, গবেষণা সামগ্রী এবং ডিজিটাল সংস্থান। শিক্ষার্থী ও গবেষকদের সুবিধার জন্য এখানে রয়েছে—

বিভিন্ন বিষয়ের বই ও গবেষণা সামগ্রী: লাইব্রেরীতে বিভিন্ন বিষয়ের উপর হাজার হাজার বই, পত্রিকা ও গবেষণা সামগ্রী সংরক্ষিত আছে, যা শিক্ষার্থীদের একাডেমিক গবেষণা ও প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

  • ডিজিটাল লাইব্রেরী সুবিধা: অনলাইন রিসোর্স ও ই-বুক সুবিধার মাধ্যমে পাঠকেরা যেকোনো সময় প্রয়োজনীয় তথ্য পেতে পারেন।
  • ক্যারিয়ার গাইডেন্স সেকশন: এই সেকশনে রয়েছে ক্যারিয়ার সম্পর্কিত বই, সরকারি ও বেসরকারি চাকরির পরীক্ষার প্রস্তুতি সামগ্রী এবং পরামর্শদাতা পরিষেবা, যা তাদের কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে সাহায্য করে।
  • শান্তিপূর্ণ পাঠাগার কক্ষ: গবেষকদের জন্য নির্দিষ্ট গবেষণা কক্ষ ও নিরিবিলি পাঠাগার কক্ষ রয়েছে, যেখানে শিক্ষার্থীরা নিরবিচারে পড়াশোনা করতে পারেন।
  • ইন্টারনেট ও কম্পিউটার সুবিধা: আধুনিক প্রযুক্তির সহায়তায় লাইব্রেরীতে ইন্টারনেট ও কম্পিউটার ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে, যা শিক্ষার্থীদের গবেষণা ও প্রজেক্ট তৈরিতে সহায়তা করে।
  • সাপ্তাহিক সেমিনার ও কর্মশালা: লাইব্রেরী প্রাঙ্গণে নিয়মিতভাবে ক্যারিয়ার ও শিক্ষামূলক সেমিনার, ওয়ার্কশপ এবং বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।

ত্রিপুরা সরকারের উচ্চশিক্ষা দফতরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, শিক্ষার্থীদের সুবিধার কথা মাথায় রেখেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এই নতুন নিয়মের ফলে—

✔️ শিক্ষার্থীরা প্রতিদিন লাইব্রেরী ব্যবহার করতে পারবেন, যা তাদের একাডেমিক উন্নতিতে সহায়ক হবে।
✔️ যারা কর্মরত অবস্থায় পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছেন, তাদের সময় অনুযায়ী লাইব্রেরীর সুবিধা নিতে পারবেন।
✔️ প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতিপ্রার্থীরা আরও বেশি সময় লাইব্রেরীর রিসোর্স ব্যবহার করতে পারবেন।
✔️ গবেষক ও শিক্ষকদের জন্য গবেষণা সামগ্রী ও ডিজিটাল রিসোর্স ব্যবহার করার সুযোগ আরও বৃদ্ধি পাবে।

ত্রিপুরা সরকারের উচ্চশিক্ষা দফতরের অতিরিক্ত সচিব স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তি অনুসারে, পরিবর্তিত সময়সূচি অবিলম্বে কার্যকর হবে। শিক্ষার্থীরা সপ্তাহের প্রতিদিন লাইব্রেরীর ক্যারিয়ার গাইডেন্স সেকশনের পাঠাগার কক্ষ ব্যবহার করতে পারবেন। এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে শিক্ষার্থী ও গবেষক মহল। তাদের মতে, লাইব্রেরীর এই গুরুত্বপূর্ণ অংশ সপ্তাহে সাত দিন খোলা থাকার ফলে অনেকেই উপকৃত হবেন, বিশেষত যারা প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন বা গবেষণার কাজে যুক্ত রয়েছেন।About Us

ভুয়া ঔষধ বাড়াচ্ছে স্বাস্থ্যঝুঁকি

নজরদারির গাফিলতিতে ত্রিপুরার বাজারে ভুয়া ঔষধ।

ত্রিপুরায় ভুয়া ঔষধের আশঙ্কা ক্রমশ বাড়ছে। ঔষধের গুণমান নিশ্চিত করতে কেন্দ্রীয় সরকার কিউআর কোড বাধ্যতামূলক করলেও, রাজ্যে এই নিয়ম কার্যকর হয়নি। ঔষধ বিক্রেতাদের সচেতনতার অভাব, প্রশাসনের গাফিলতি ও ড্রাগ কন্ট্রোল বিভাগের নিষ্ক্রিয়তার কারণে সাধারণ মানুষ ভুয়া ঔষধ সনাক্ত করতে পারছেন না। ফলে এই ঔষধ সেবনের মাধ্যমে স্বাস্থ্যঝুঁকি বহুগুণ বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। ত্রিপুরার ঔষধ বাজারে ভুয়া ও অনুমোদনহীন ঔষধের ছড়াছড়ি নিয়ে চরম উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশ অনুযায়ী, ঔষধের গুণমান নিশ্চিত করতে প্রতিটি প্যাকেটে কিউআর কোড বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। তবে রাজ্যে এই নিয়মের কার্যকর প্রয়োগের কোনও লক্ষণ নেই। ঔষধ নিয়ন্ত্রণ বিভাগও (ড্রাগ কন্ট্রোল) এই বিষয়ে কোন নজরদারি চালাচ্ছে না, যার ফলে সাধারণ মানুষ নকল ঔষধের শিকার হচ্ছেন।

নির্দেশিকা

ভারত সরকারের কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ভুয়া ঔষধ প্রতিরোধে কিউআর কোড স্ক্যানিং ব্যবস্থা চালু করেছে। এই কোড স্ক্যান করলেই ঔষধের উৎপাদক সংস্থা, ব্যাচ নম্বর, উৎপাদনের তারিখ, মেয়াদ উত্তীর্ণের সময়সহ যাবতীয় তথ্য জানা যাবে। এর ফলে সহজেই ভুয়া ঔষধ চিহ্নিত করা সম্ভব হবে। কিন্তু ত্রিপুরার অধিকাংশ ঔষধের দোকানে এখনও কিউআর কোড স্ক্যানিং ব্যবস্থা চালু হয়নি। বিক্রেতাদের একাংশ কিউআর কোডের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কেও ওয়াকিবহাল নন। সাধারণ জনগণের মধ্যেও এই বিষয়ে সচেতনতার অভাব রয়েছে। ফলে তাঁরা যাচাই না করেই ঔষধ কিনতে বাধ্য হচ্ছেন, যা তাঁদের স্বাস্থ্যের পক্ষে মারাত্মক ক্ষতির কারণ হতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

রিপোর্ট

কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সাম্প্রতিক এক রিপোর্ট অনুযায়ী, ভারতে বাজারে থাকা প্রায় ৩ শতাংশ ঔষধ ভুয়া, যা মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত বিপজ্জনক। বিভিন্ন রাজ্যে একাধিকবার ভুয়া ঔষধের কারবার ধরা পড়েছে, এবং ত্রিপুরাও এই তালিকায় নতুন নয়। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, ত্রিপুরার মতো ছোট রাজ্যেও অনুমোদনহীন ঔষধের ব্যবসা চলছে গোপনে। বাজারে এমন কিছু ঔষধ পাওয়া যাচ্ছে, যেগুলো কেন্দ্রীয় অনুমোদনপ্রাপ্ত নয় এবং কার্যকারিতা ও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়েও সন্দেহ রয়েছে। এর ফলে রোগীরা ঔষধ গ্রহণের পর উপযুক্ত চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন এবং মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকির মুখে পড়ছেন।

গাফিলতিঃ

ত্রিপুরার ড্রাগ কন্ট্রোল বিভাগ রাজ্যে ভুয়া ঔষধ ছড়িয়ে পড়ার বিষয়ে কার্যকর কোনও পদক্ষেপ নেয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। অনুমোদনহীন ঔষধের বিক্রি বাড়লেও ঔ অভিযান চালানো হচ্ছে না। ফলে ভুয়া ঔষধের ব্যবসা রমরমিয়ে চলেছে এবং সাধারণ মানুষের জীবন ঝুঁকির মুখে পড়েছে। অভিযোগ রয়েছে, রাজ্যের অনেক ঔষধ দোকানে মেয়াদোত্তীর্ণ ও অনুমোদনহীন ঔষধ বিক্রি হচ্ছে, যা ক্রেতাদের অজান্তেই স্বাস্থ্যের মারাত্মক ক্ষতি করছে। কিন্তু প্রশাসনের পক্ষ থেকে কড়া ব্যবস্থা না নেওয়ায় অসাধু ব্যবসায়ীরা আরও সক্রিয় হয়ে উঠেছে।

পরামর্শ

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ত্রিপুরায় দ্রুত কিউআর কোড ব্যবস্থা বাস্তবায়ন না হলে সাধারণ মানুষ আরও বেশি ভুয়া ঔষধের ফাঁদে পড়বেন। তাই এই সমস্যা সমাধানে সরকারকে জরুরি ভিত্তিতে উদ্যোগ নিতে হবে। বিশেষজ্ঞদের মতে –

✅ সরকারকে কিউআর কোড ব্যবস্থা সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে।
✅ সংবাদমাধ্যম, সোশ্যাল মিডিয়া ও স্থানীয় প্রশাসনের মাধ্যমে জনগণকে ঔষধের বৈধতা যাচাইয়ের পদ্ধতি সম্পর্কে জানানো প্রয়োজন।
✅ ড্রাগ কন্ট্রোল বিভাগকে আরও সক্রিয় হতে হবে এবং নিয়মিত অভিযান চালাতে হবে।
✅ অনুমোদনহীন ঔষধ বিক্রির বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নিতে হবে।

প্রশ্নচিহ্নঃ

রাজ্যের স্বাস্থ্য দপ্তর ও ড্রাগ কন্ট্রোল বিভাগের নিষ্ক্রিয়তায় সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভ বাড়ছে। কেন্দ্রীয় নির্দেশিকা থাকলেও তা কার্যকর করতে রাজ্যের অনীহা কেন? প্রশ্ন তুলছেন বিশেষজ্ঞরা। রাজ্যের প্রশাসন যদি দ্রুত কঠোর পদক্ষেপ না নেয়, তাহলে ত্রিপুরার বাজারে ভুয়া ঔষধের রমরমা চলতেই থাকবে। এতে সাধারণ জনগণের স্বাস্থ্যঝুঁকি আরও বেড়ে যাবে।

শেষ কথা

ত্রিপুরায় ভুয়া ঔষধের ছড়িয়ে পড়া শুধুমাত্র স্বাস্থ্য সংকট নয়, এটি প্রশাসনিক ব্যর্থতারও পরিচায়ক। সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্যের সঙ্গে কোনওরকম আপস করা যায় না। তাই সরকার, প্রশাসন এবং ঔষধ নিয়ন্ত্রণ বিভাগকে একযোগে কাজ করতে হবে। নয়তো পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে।About Us

মহিলা স্বশক্তিকরণ

মহিলা ও পন সংক্রান্ত মামলা নির্মূলের আশ্বাস মুখ্যমন্ত্রীর!

ত্রিপুরা রাজ্যের মহিলাদের স্বনির্ভরতা ও সামাজিক সুরক্ষার বিষয়টি সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে দেখছে বর্তমান সরকার। রাজ্যে পণ সংক্রান্ত মামলাগুলিকে সম্পূর্ণ নির্মূল করার লক্ষ্যে একাধিক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। শুক্রবার আগরতলার ৩৩ নং পুর ওয়ার্ডের মহিলা স্বশক্তিকরণ কমিটির উদ্যোগে ‘স্বাবলম্বী নারী, স্বাবলম্বী ত্রিপুরা’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা একথা জানান।

সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “ত্রিপুরায় পণ সংক্রান্ত মামলার সংখ্যা তুলনামূলকভাবে কম। তবে আমরা কোনো ঝুঁকি নিতে চাই না। আমরা চাই, রাজ্যে এই ধরনের মামলাগুলির সংখ্যা শূন্যে নেমে আসুক। কোনো নারী যাতে এই ধরনের সমস্যার সম্মুখীন না হন, সেজন্য সরকার নিরবচ্ছিন্নভাবে কাজ করছে।” তিনি জানান, পণপ্রথা প্রতিরোধের জন্য প্রশাসনিক স্তরে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। ৮ জন ডেপুটি কালেক্টরকে ডিস্ট্রিক্ট ডাউরি প্রহিবিশন অফিসার এবং মহকুমা শাসকদের ডাউরি প্রহিবিশন অফিসার হিসেবে নিযুক্ত করা হয়েছে।

মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, “নারীরা সমাজের চালিকাশক্তি। ঘরের মধ্যে তারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন, সমাজেও তাঁদের সমানভাবে নেতৃত্ব দিতে হবে। মহিলাদের স্বশক্তিকরণের ওপর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিজি বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন। তাঁর উদ্যোগেই তিন তালাক প্রথা বিলুপ্ত হয়েছে, যা সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মা-বোনেদের জন্য এক ঐতিহাসিক পদক্ষেপ।” তিনি বলেন, “আগের সরকার শুধুমাত্র মিছিল-মিটিংয়ে  নারীদের ব্যবহার করত, কিন্তু আমাদের সরকার মহিলাদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে বাস্তবসম্মত উদ্যোগ নিয়েছে। বর্তমানে তারা স্বাবলম্বী হচ্ছেন, অর্থনৈতিক উন্নয়নের কারণে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর সাহস পাচ্ছেন।” মুখ্যমন্ত্রী আরো বলেন, “শুধুমাত্র পুরুষদের মাধ্যমে দেশের উন্নয়ন সম্ভব নয়। বর্তমানে তারা পাইলট, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, মহাকাশচারী থেকে শুরু করে ট্রেন চালানো এবং গাড়ি চালানোর মতো কাজেও নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করেছেন। আজ তাঁরা আর কোনো ক্ষেত্রেই পিছিয়ে নেই, বরং পুরুষদের সঙ্গে সমানতালে এগিয়ে চলেছেন।”

ত্রিপুরা রাজ্য সরকার ২০২২ সালে ত্রিপুরা স্টেট পলিসি ফর এমপাওয়ারমেন্ট অফ ওমেন চালু করেছে, যার মাধ্যমে মহিলাদের কল্যাণে একাধিক পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হয়েছে। ত্রিস্তর পঞ্চায়েত ও আরবান লোক্যাল বডির নির্বাচনে মহিলাদের ৫০% এর বেশি আসন সংরক্ষিত করা হয়েছে। এছাড়া, টিএসআর বাহিনীতেও ৩৩% সংরক্ষণ নিশ্চিত করা হয়েছে। শিক্ষাক্ষেত্রে নারী শক্তিকে এগিয়ে নিতে রাজ্য সরকার গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছে।

মুখ্যমন্ত্রী জানান, “অর্থনৈতিক অসচ্ছলতার কারণে অনেক মেয়েকে স্কুল ছাড়তে হয়। তাই রাজ্য সরকার ছাত্রীদের জন্য সমস্ত ধরণের ফি মুকুবের ব্যবস্থা করেছে।” তাছাড়া, গন্ডাতুইসায় একটি নতুন ৫০ বেডের ছাত্রী হোস্টেল স্থাপন করা হয়েছে। নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে রাজ্যের প্রতিটি জেলায় নারী শক্তি পরিচালিত পুলিশ স্টেশন গড়ে তোলা হয়েছে। আগে মহিলারা প্রশাসনিক কাজে ভয় পেতেন, কিন্তু এখন তারা তাদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন এবং নির্ভয়ে প্রশাসনের দ্বারস্থ হচ্ছেন।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে দেশে এমএনরেগা প্রকল্পের মাধ্যমে স্বচ্ছতা ও আর্থিক স্বনির্ভরতা নিশ্চিত হয়েছে। আগে এই প্রকল্পের মাধ্যমে মহিলাদের মজুরির অর্থ মধ্যস্থতাকারীদের হাতে চলে যেত, কিন্তু বর্তমানে প্রত্যেক শ্রমিকের মজুরি সরাসরি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা হচ্ছে। এ বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আগে মহিলারা রাজনৈতিক চাপের কারণে কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করতে বাধ্য হতেন। কিন্তু এখন তাঁরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে সরকারি প্রকল্পগুলির সুবিধা গ্রহণ করছেন।”

মুখ্যমন্ত্রী মনে করিয়ে দেন যে ৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসেবে পালিত হয়। তিনি বলেন, “আমাদের সরকার নারীদের অধিকার রক্ষা এবং সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য কাজ করে যাচ্ছে। শুধু ভাষণে নয়, বাস্তব কাজের মাধ্যমেই আমরা মহিলাদের সুরক্ষা ও ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে এগিয়ে চলেছি।”

এই গুরুত্বপূর্ণ সভায় উপস্থিত ছিলেন ভারতীয় জনতা পার্টির প্রদেশ সভাপতি তথা সাংসদ রাজীব ভট্টাচার্য, আগরতলা পুর নিগমের মেয়র দীপক মজুমদার, ডেপুটি মেয়র মনিকা দাস দত্ত, পুর কর্পোরেটর অভিজিত মল্লিক, সদর আরবান জেলার সভাপতি অসীম ভট্টাচার্য, বড়দোয়ালি মন্ডলের সভাপতি শ্যামল কুমার দেব, মার্কফেডের ভাইস চেয়ারম্যান সঞ্জয় সাহা সহ অন্যান্য বিশিষ্ট অতিথিবৃন্দ। মহিলাদের স্বনির্ভরতা, শিক্ষা, কর্মসংস্থান ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ত্রিপুরা সরকার যেভাবে কাজ করছে, তা রাজ্যের সার্বিক উন্নয়নের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে উঠছে। মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহার নেতৃত্বে ত্রিপুরা মহিলাদের জন্য এক নতুন দিগন্তের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।About Us

সীমান্তে নিহত বাংলাদেশি

বিএসএফের গুলিতে সীমান্তে নিহত বাংলাদেশী পাচারকারী!

ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে আবারও রক্ত ঝরল। ত্রিপুরার কলমচৌড়া থানার অন্তর্গত পুটিয়া সীমান্তের ৬ নম্বর গেট এলাকায় শুক্রবার সন্ধ্যায় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)-এর গুলিতে এক বাংলাদেশি পাচারকারী নিহত হয়েছেন। নিহত ব্যক্তির নাম আলামিন, তিনি বাংলাদেশের কুমিল্লা জেলার সালদা নদী বিওপি (বর্ডার আউট পোস্ট) অধীনস্থ পুটিয়া গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন।

ঘটনা!

সূত্রের খবর, সীমান্তে পাচারকারীদের একটি দল চিনি পাচারের চেষ্টা করছিল। বিএসএফ সদস্যরা তাদের বাধা দিলে বাংলাদেশ দিক থেকে পাচারকারীরা পাথর নিক্ষেপ শুরু করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে গেলে বিএসএফ আত্মরক্ষার্থে গুলি চালায়। এতে আলামিন গুরুতর আহত হন। বিএসএফ সদস্যরা আহত পাচারকারীকে উদ্ধার করে বিশালগড় মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যান, কিন্তু সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

উত্তেজনা!

এই ঘটনার পরপরই বিশালগড় থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে তদন্ত শুরু করেছে। বিএসএফের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সীমান্তে পাচারকারীরা নিয়মিত অনুপ্রবেশের চেষ্টা চালায় এবং আইন অমান্য করে অবৈধ কার্যকলাপে লিপ্ত হয়। বিএসএফের দাবি, পাচারকারীরা সীমান্ত সুরক্ষাকে উপেক্ষা করেই ভারতীয় ভূখণ্ডে প্রবেশের চেষ্টা করছিল। নিহতের মৃতদেহ বর্তমানে বিশালগড় মহকুমা হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সাধারণত এ ধরনের ঘটনার পর বাংলাদেশ সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিবাদ জানায় এবং দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।

উদ্যোগ!

সীমান্তে উত্তেজনা প্রশমনে ভারত-বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এবং বিএসএফের মধ্যে আজ একটি পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে পারে বলে জানা গেছে। ওই বৈঠকের মাধ্যমে নিহত ব্যক্তির মরদেহ বাংলাদেশের কাছে হস্তান্তরের বিষয়েও আলোচনা হতে পারে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, সীমান্ত এলাকায় এ ধরনের ঘটনা নতুন নয়। অবৈধ পাচার রোধে বিএসএফ ও বিজিবি উভয় পক্ষকেই আরও কার্যকর ভূমিকা নিতে হবে। এদিকে, বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে এই ঘটনায় আনুষ্ঠানিক প্রতিবাদ জানানোর সম্ভাবনা রয়েছে বলে কূটনৈতিক মহল মনে করছে।

সম্পর্ক!

ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে সুদীর্ঘকাল ধরে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় থাকলেও, সীমান্তে মাঝে মাঝেই এই ধরনের সংঘর্ষ পরিস্থিতির সৃষ্টি করে। পাচার, অনুপ্রবেশ, অননুমোদিত সীমান্ত অতিক্রম ইত্যাদি কারণে দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। যদিও কূটনৈতিকভাবে এই সমস্যাগুলো সমাধানের চেষ্টা চালানো হয়, তবু সীমান্তে রক্তপাত রোধে কার্যকর পদক্ষেপের প্রয়োজন রয়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া কী হয় এবং দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী কী পদক্ষেপ নেয়, তা এখন দেখার বিষয়।About Us