ত্রিপুরা বিজেপি কি পারবে সংঘ পরিবারের দীক্ষায় দীক্ষিত হতে

ত্রিপুরা বিজেপির নতুন সভাপতি নির্বাচন ঘিরে টানটান উত্তেজনা!!

আগামী দিনে ত্রিপুরা প্রদেশ বিজেপির নতুন সভাপতি কে হবেন, তা নিয়ে জোর জল্পনা চলছে দলের অভ্যন্তরে ও রাজনৈতিক মহলে। বর্তমান সভাপতি রাজীব ভট্টাচার্য্যের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর থেকেই দলের শীর্ষ নেতৃত্ব নতুন সভাপতির নাম চূড়ান্ত করতে দফায় দফায় বৈঠক চলছে। তবে এখনো পর্যন্ত কোন নির্দিষ্ট নাম ঘোষণা করা সম্ভব হয়নি। ফলে রাজ্যের বিজেপি শিবিরে দেখা দিয়েছে চরম অস্থিরতা এবং তা নিয়ে দলীয় কর্মীদের মধ্যে বিভাজন স্পষ্ট ভাবে পরিলক্ষিত হচ্ছে।

সূত্রের খবর, প্রদেশ বিজেপির সভাপতি পদের জন্য দুটি প্রধান নাম উঠে এসেছে। প্রথমজন হলেন রাজ্যের বর্তমান মন্ত্রী টিঙ্কু রায় এবং দ্বিতীয়জন হলেন বিধায়ক ভগবান দাস। উভয়েরই দলীয় অভিজ্ঞতা রয়েছে এবং তারা সংগঠনের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে যুক্ত। তবে, এখানেই শেষ নয়। বর্তমান সভাপতি রাজীব ভট্টাচার্য্যও পুনরায় সভাপতি হওয়ার জন্য মরিয়া চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তিনি দলের শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে বিকল্প কোনো নাম প্রস্তাব করেননি, বরং নিজের অবস্থান ধরে রাখতে নানা কৌশল অবলম্বন করে চলেছেন।

একটি বিশেষ সূত্র জানিয়েছে, বিজেপির সর্বভারতীয় নেতৃত্ব ত্রিপুরা প্রদেশ কমিটির সভাপতি নির্বাচনে একটি বড় চমক দেখাতে পারে। আলোচনায় থাকা দুই নামের বাইরে তৃতীয় কেউ এই পদ পেতে পারেন বলে সন্দেহ করা হচ্ছে, যার নাম এখনো প্রকাশ্যেই আসেনি। বিশেষজ্ঞদের মতে, এক্ষেত্রে সংঘ পরিবারের ভূমিকা বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। সংঘ পরিবারের মতাদর্শ ও রাজনৈতিক শিক্ষায় শিক্ষিত কাউকে দায়িত্ব দেওয়ার পরিকল্পনা হতে পারে দলের শীর্ষ মহলের।

এই পরিস্থিতিতে আগামী ৩রা এপ্রিল ত্রিপুরা সফরে আসতে পারেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসভার সদস্য জুয়েল ওরাম। তিনি বিজেপির সাংগঠনিক নির্বাচন প্রক্রিয়ার দায়িত্বে রয়েছেন তাই তার এই সফরকে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। রাজনৈতিক মহলের ধারণা, তিনি রাজ্য সফর শেষে দিল্লি ফিরে গেলেই প্রদেশ সভাপতি পদের নতুন নাম ঘোষণা করা হতে পারে।

নতুন সভাপতি নির্বাচনকে ঘিরে রাজ্য বিজেপির ভেতরে একাধিক গোষ্ঠী সক্রিয় হয়ে উঠেছে। একদিকে কংগ্রেস থেকে আসা নেতাদের একটি অংশ আলাদা অবস্থানে রয়েছে, অন্যদিকে দীর্ঘদিনের পুরানো বিজেপি নেতারা সংগঠনের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে চাইছেন। তবে সংঘ পরিবারের ঘনিষ্ঠ নেতারাও নিজেদের অবস্থান শক্ত করতে চাইছেন। এই কোন্দল এখন আর দলের ভেতরে সীমাবদ্ধ নেই, সাধারণ মানুষের মধ্যে তা নিয়ে চলছে প্রকাশ্যে আলোচনা।

এই দলীয় অস্থিরতার ফলে বিজেপির সাংগঠনিক কাঠামো বেশ কিছুটা দুর্বল হয়ে পড়েছে, যা বিরোধী দলগুলোর জন্য স্বস্তিদায়ক পরিস্থিতি তৈরি করেছে। কংগ্রেস ও সিপিআইএম ইতিমধ্যেই নিজেদের শক্তি পুনর্গঠনের কাজে লেগে পড়েছে। যদি বিজেপি দ্রুত সভাপতি নির্বাচন প্রক্রিয়া সম্পন্ন না করতে পারে, তাহলে আগামী দিনে এই দ্বন্দ্বের খেসারত দিতে হতে পারে শাসক দলকে। ত্রিপুরা বিজেপির নতুন সভাপতি নির্বাচন শুধু দলের অভ্যন্তরীণ বিষয় নয়, বরং এটি রাজ্যের ভবিষ্যৎ ও রাজনীতির গতিপথ নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এখন দেখার বিষয়, সর্বভারতীয় নেতৃত্ব কাকে এই গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দেয় এবং তিনি কিভাবে বিজেপির বর্তমান শক্তিকে অক্ষুন্ন রেখে সংঘ পরিবারের সাংগঠনিক শ্রীবৃদ্ধি করে।About Us

চাকরি

চাকরি সংক্রান্ত দ্রুত ও নির্ভরযোগ্য আপডেট পেতে চোখ রাখুন “Straightlines News– কর্মবার্তা” ডেস্কে

 

ISI

বাংলাদেশের কোটা আন্দোলন কি তাহলে ISI-এর ইশারায়??

বাংলাদেশের নারায়ণগঞ্জ থেকে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদী আতাউল্লাকে নাটকীয়ভাবে গ্রেফতার করেছে নারায়ণগঞ্জ পুলিশ। এই ঘটনায় দেশজুড়ে তীব্র চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। তদন্তে উঠে এসেছে যে, আতাউল্লাহ পাকিস্তানের গুপ্তচর সংস্থা ISI-এর প্রশিক্ষিত এজেন্ট এবং বাংলাদেশে রোহিঙ্গা শিবিরের তরুণদের সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপে যুক্ত করার গুরুদায়িত্ব পালন করছিল। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশের রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে, এবং বিশেষজ্ঞরা এটিকে পাক ISI-এর দীর্ঘমেয়াদী ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে দেখছেন।

গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে, আতাউল্লাহ দীর্ঘদিন ধরে ISI-এর প্রশিক্ষণ নিয়ে বাংলাদেশে সক্রিয় ছিল। তার প্রধান কাজ ছিল রোহিঙ্গা শিবিরের যুবকদের সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপের দিকে ধাবিত করা এবং তাদের ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে মাদক পাচার ও জঙ্গি কার্যক্রমে নিয়োজিত করা। বাংলাদেশে তার উপস্থিতি ও কার্যক্রম প্রমাণ করে যে, পাক ISI দক্ষিণ এশিয়ায় অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির লক্ষ্যে বাংলাদেশকে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহার করতে চাইছে।

বাংলাদেশে অবস্থানরত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর মধ্যে চরমপন্থী কার্যকলাপ ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য আতাউল্লাহকে নিয়োগ করা হয়েছিল পাকিস্তান ISI এর তরফ থেকে। সে রোহিঙ্গা তরুণদের মগজধোলাই করে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপে যুক্ত করত এবং ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে বিভিন্ন বেআইনি কার্যক্রম পরিচালনা করত। গোয়েন্দা প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই সন্ত্রাসী চক্রের অন্যতম উদ্দেশ্য ছিল উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলিতে মাদক ও অস্ত্র পাচার করা এবং সেখানকার উগ্রপন্থী সংগঠনগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করা।

সম্প্রতি বাংলাদেশে ঘটে যাওয়া ছাত্র আন্দোলনের পেছনে পাকিস্তানি ISI-এর প্রত্যক্ষ মদত ছিল বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। বিশ্লেষকদের মতে, এই আন্দোলনকে ব্যবহার করে হাসিনা সরকারকে অস্থির করার ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল পাকিস্তানি সংস্থা ISIএর তরফ থেকে। ছাত্র আন্দোলনের নামে দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা এবং রাজনৈতিক অস্থিরতা বাড়িয়ে তোলাই ছিল এই ষড়যন্ত্রের মূল লক্ষ্য। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, পাক ISI দীর্ঘদিন ধরেই বাংলাদেশকে পুনরায় পূর্ব পাকিস্তানে পরিণত করার ষড়যন্ত্র করছে। তাদের মূল লক্ষ্য হলো বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করে তোলা এবং ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের মধ্যে ফাটল সৃষ্টি করা। আতাউল্লাহর গ্রেফতারি সেই ষড়যন্ত্রেরই একটি বড় প্রমাণ।

এই ঘটনায় বাংলাদেশের বর্তমান স্বঘোষিত ইউনুস সরকারের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। আশ্চর্যের বিষয় হলো, এত বড় একটি আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী চক্রের ফাঁস হওয়ার পরও ইউনুস সরকার নীরবতা পালন করছে। অনেক বিশ্লেষকের মতে, ইউনুস সরকারের নিরবতা এই ষড়যন্ত্রের সঙ্গে তাদের কোনো না কোনো সংযোগের ইঙ্গিত দিচ্ছে।

ভারত এই ঘটনাকে অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে পর্যবেক্ষণ করছে এবং বাংলাদেশের সঙ্গে নিরাপত্তা সহযোগিতা আরও জোরদার করার পরিকল্পনা করছে। ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে নজরদারি আরও কঠোর করা হয়েছে এবং ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলোও এই চক্রের মূল হোতাদের চিহ্নিত করার কাজ শুরু করেছে বলে খবরের প্রকার। বাংলাদেশ সরকার যদি কঠোর পদক্ষেপ না নেয়, তবে এই ধরনের ষড়যন্ত্র আরও গভীর হতে পারে। সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায় বাংলাদেশ-ভারত যৌথ উদ্যোগ নেওয়ার সময় এসেছে। পাক ISI-এর ষড়যন্ত্র রুখতে উভয় দেশকেই আরও শক্তিশালী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে বলে মনে করছেন অভিজ্ঞ মহল।About Us

তিপ্রামথা আন্দোলন

সম্মানজনক সমঝোতার সন্ধানে আন্দোলনরত মথা নেত্রীত্ব!!

ত্রিপুরায় রোমান হরফ বিতর্ক ঘিরে উত্তেজনা ক্রমশ বাড়ছে। একদিকে জনজাতি ছাত্র সংগঠনের লাগাতার আন্দোলন, অন্যদিকে রাজ্য সরকারের স্পষ্ট অবস্থান—এই দ্বৈরথের মাঝখানে রাজনৈতিক সঙ্কটে পড়েছেন প্রদ্যুত কিশোর দেববর্মা। রাজ্যের জনজাতি ছাত্র সংগঠনগুলোর দাবির প্রতি সমর্থন জানালেও, সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে তিনি সম্মানজনক সমঝোতার পথ খুঁজছেন বলে রাজনৈতিক মহলে আলোচনা শুরু হয়েছে।
গত কয়েকদিন ধরে ত্রিপুরার বিভিন্ন এলাকায় রোমান হরফে ককবরক ভাষা চালুর দাবিতে তীব্র আন্দোলন চলছে। ত্রিপাক্ষিক চুক্তির শর্ত ভঙ্গ করে ছাত্রদের পথে নামিয়েছেন প্রদ্যুত, এমন অভিযোগ তুলেছে বিরোধী শিবির। অন্যদিকে, বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহার বক্তব্য থেকে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে, রাজ্য সরকার রোমান হরফের দাবিতে নমনীয় নয়। বিজেপির জনজাতি মোর্চাও রোমান হরফের বদলে দেবনাগরি হরফের পক্ষে মত দিয়েছে।

রোমান হরফের দাবিতে শুক্রবার থেকে রাজ্যের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়কে অবরোধ শুরু করে জনজাতি ছাত্র সংগঠন টি.এস.এফ। ২৪ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও, এখনো বিভিন্ন এলাকায় আন্দোলন অব্যাহত। তেলিয়ামুড়া থানার অন্তর্গত হাওয়াইবাড়িতে শনিবার সকালেও ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়। প্রায় ৪৫ কিলোমিটার জুড়ে ছোট-বড় যানবাহন, মালবাহী ট্রাক আটকে পড়ে। পেঁয়াজ, রসুন, তরমুজের মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যবাহী ট্রাকগুলো আটকে থাকায়, ব্যবসায়ীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। যাত্রীদের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। অনেকে রাস্তার ওপর বসেই রাত কাটিয়েছেন। দীর্ঘক্ষণ আটকে থাকার ফলে শিশু, বৃদ্ধ ও অসুস্থ রোগীরা সমস্যায় পড়েছেন। অথচ প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনো কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন সাধারণ মানুষ।

শনিবার আগরতলা প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে মথার ছাত্র সংগঠন সাফ জানিয়ে দিয়েছে, তারা কোনোভাবেই রোমান হরফের দাবিতে পিছু হটবে না। বরং আন্দোলন আরও তীব্র করবে। সোমবার রাজধানী আগরতলায় ফের বিক্ষোভের ডাক দিয়েছে তারা। অন্যদিকে, সরকারের তরফ থেকে স্পষ্ট ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে, এই মুহূর্তে রোমান হরফের দাবিতে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরিকল্পনা নেই। মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহার নির্দেশে আগে একটি বিশেষ কমিটি গঠন করা হয়েছিল এই বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য। তবে সেই কমিটির রিপোর্ট জমা পড়েছে কিনা, তা এখনো স্পষ্ট নয়।

রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, এই আন্দোলন এখন প্রদ্যুত কিশোর দেববর্মার জন্যও বড় সঙ্কট হয়ে দাঁড়িয়েছে। জনজাতি ছাত্র সংগঠনের দাবি নিয়ে রাজ্য সরকারের কড়া অবস্থানের কারণে তিনি একদিকে চাপে রয়েছেন, অন্যদিকে রাজ্যের সাধারণ মানুষের ভোগান্তি বাড়ায় আন্দোলনের প্রতি জনসমর্থন নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। বিজেপি এই ইস্যুতে কঠোর অবস্থান নেওয়ায়, দিল্লির সঙ্গেও প্রদ্যুতের সম্পর্ক নতুন পরীক্ষার মুখে। ফলে, একদিকে আন্দোলনকারীদের রোষ, অন্যদিকে প্রশাসনিক কড়াকড়ির বাস্তবতা—এই দুইয়ের মাঝে তিনি আপাতত একটি সম্মানজনক সমঝোতার পথ খুঁজছেন বলেই রাজনৈতিক মহলের ধারণা। এই অবস্থায় পরিস্থিতি কোন দিকে মোড় নেয়, এখন সেদিকেই তাকিয়ে রাজ্যবাসী।About Us

রং বদলের ইঙ্গিত বাম শিবিরে

লাল রং ছেড়ে নীল-হলুদকে আপন করল সিপিআইএম?

সময়ের স্রোতে নিজেদের রং বদলে ফেলছে সিপিআইএম! একসময় যে দল লাল ঝান্ডার ঐতিহ্য নিয়ে গর্ব করত, সেই দলই কি এবার তার চিরাচরিত আদর্শ থেকে সরে আসছে? অন্তত তাদের সাম্প্রতিক সোশ্যাল মিডিয়া পরিবর্তন তো সেই ইঙ্গিতই দিচ্ছে। বামফ্রন্টের দীর্ঘ লড়াই, শ্রমিক-কৃষকের বিপ্লবী ইতিহাস সবসময় লাল রঙের সঙ্গে যুক্ত ছিল। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে, বঙ্গ সিপিআইএমের সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টের প্রোফাইল ছবি বদলে গিয়েছে। লালের পরিবর্তে সেখানে জায়গা করে নিয়েছে নীল-সাদার মিশ্রণ। শুধু তাই নয়, বামপন্থার প্রতীক কাস্তে-হাতুড়ির রংও বদলে হয়েছে হলুদ। স্বাভাবিকভাবেই এমন পরিবর্তন রাজনৈতিক মহলে আলোড়ন ফেলেছে।

বিগত কয়েক বছরে সিপিআইএম একের পর এক নির্বাচনে পরাজিত হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গে দল প্রায় শূন্যে পৌঁছে গেছে। ত্রিপুরাতেও লাল পতাকা অনেকটাই ফিকে। বিজেপির উত্থানের পর থেকে লড়াইয়ে টিকে থাকার চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে বামেরা। অনেকের মতে, দলীয় ভাবমূর্তি বদলাতে এবং আধুনিকতার সঙ্গে তাল মেলাতে বামেরা এমন পরিবর্তন এনেছে। তবে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, এই রং পরিবর্তনের পিছনে আরও গভীর বার্তা লুকিয়ে থাকতে পারে। সিপিআইএম কি তবে লালের ‘রক্তাক্ত ইতিহাস’ ভুলতে চাইছে? নাকি তারা নতুনভাবে নিজেদের তুলে ধরতে চাইছে?

সোশ্যাল মিডিয়ার কমেন্টস বক্সে সিপিআইএমের এই নীল-সাদা রঙের দিকে ঝোঁকার ঘটনায় তুলনা করা হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে। কারণ, নীল-সাদা পশ্চিমবঙ্গ সরকারের চিরপরিচিত রং। কেউ কেউ কটাক্ষ করে বলছেন, ‘সিপিআইএম কি এবার তৃণমূলের ছায়ায় গিয়ে দাঁড়াচ্ছে?’ সোশ্যাল মিডিয়ায় এই পরিবর্তন নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। অনেকেই লিখছেন, ‘‘যে দল একসময় প্রযুক্তি বিরোধিতা করত, তারাই এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় ইমেজ বদলে নিজেদের নতুন ভাবে চেনানোর চেষ্টা করছে।’’ কেউ কেউ বলছেন, ‘‘এবার কি লাল পতাকার জায়গায় নীল-হলুদ পতাকা উঠবে?’’

এ বিষয়ে সিপিআইএমের কেন্দ্রীয় কমিটির এক নেতার বক্তব্য, ‘‘এটা শুধুমাত্র একটা ভিজ্যুয়াল পরিবর্তন। লাল আমাদের রক্তে মিশে আছে, তা মুছে ফেলা সম্ভব নয়। তবে পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেওয়া প্রয়োজন।’’
অন্যদিকে, ত্রিপুরা সিপিআইএমের এক কর্মী হতাশার সুরে বলেন, ‘‘আমরা এতদিন যে লালের জন্য লড়াই করলাম, সেই লাল এখন হলুদ হয়ে গেল? তাহলে কি আমাদের আদর্শও বদলে যাবে?’’ সিপিআইএমের এই ‘রং বদল’ শুধুই প্রতীকী পরিবর্তন, নাকি এর মাধ্যমে দল ভবিষ্যতে আরও বড় কিছু ঘোষণা করতে চলেছে, তা এখনো স্পষ্ট নয়। তবে এই নতুন ইমেজ তৈরির প্রচেষ্টায় কি আদৌ জনসমর্থন ফিরে পাবে সিপিআইএম? নাকি এই পরিবর্তন আরও বিভ্রান্তি তৈরি করবে?

রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, সিপিআইএমকে কেবল রঙের পরিবর্তন করলেই চলবে না, তাদের হারানো গণভিত্তিও ফিরে পেতে হবে। ত্রিপুরার মতো জায়গায় যেখানে বামফ্রন্ট একসময় শক্তিশালী ছিল, সেখানেও তাদের পুনরুত্থানের জন্য সংগঠনের ভিতকে আরও মজবুত করতে হবে। সময়ের সঙ্গে বামেদের আদর্শ কি সত্যিই বদলাচ্ছে? নাকি শুধুমাত্র একটি চিত্র পরিবর্তনের মাধ্যমে তারা জনমনে নতুন বার্তা দিতে চাইছে? এই প্রশ্নের উত্তর সময়ই দেবে।About Us

ত্রিপুরা বাজেট 2025-26

২০২৫-২৬ অর্থবছরের ত্রিপুরা রাজ্যের বাজেট সারাংশ!!

২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য ৩২,৪২৩.৪৪ কোটি টাকার বাজেট শুক্রবার পেশ করেছেন ত্রিপুরার অর্থমন্ত্রী প্রনজিত সিংহ রায়। এই বাজেট ২০২৪-২৫ অর্থবছরের তুলনায় ১৬.৬১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এবারের বাজেটে মূলধনী ব্যয় ৭,৯০৩.২৬ কোটি টাকা ধার্য করা হয়েছে, যা পূর্ববর্তী অর্থবছরের তুলনায় ১৯.১৪ শতাংশ বেশি। বাজেট ঘাটতি নির্ধারিত হয়েছে ৪২৯.৫৬ কোটি টাকা। অর্থমন্ত্রী জানিয়েছেন, এবারের বাজেট অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধির উপর জোর দিচ্ছে এবং নারীর ক্ষমতায়নকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, বাজেটে কোনো নতুন করের প্রস্তাব করা হয়নি। সমস্ত শ্রেণির মানুষের কথা মাথায় রেখে বাজেট তৈরি করা হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

কৃষি, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যঃ

২০২৫-২৬ অর্থবছরে কৃষি ও সংশ্লিষ্ট খাতের জন্য ১,৮৮৫.৪২ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে, যা ২০২৪-২৫ সালের বাজেটের তুলনায় ৯.৪৯% বেশি। শিক্ষা খাতে ৬,১৬৬.১৯ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে, যা আগের বছরের তুলনায় ১১.৯৪% বেশি। স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ করা হয়েছে ১,৯৪৮.৬৯ কোটি টাকা, যা ২০২৪-২৫ সালের তুলনায় ১২.৮৯% বেশি।

নতুন প্রকল্পঃ

  • ‘মুখ্যমন্ত্রী শস্য শ্যামলা যোজনা’: উচ্চ ফলনশীল জাতের ফসলের প্রচারের জন্য এই নতুন প্রকল্প চালু করা হয়েছে। এর জন্য ৫ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।
  • ‘বিজ্ঞান বিষয় ও ইংরেজি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র’: প্রতিটি সাব-ডিভিশনে একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির ১০০ জন শিক্ষার্থীর জন্য প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন করা হবে। সদর মহকুমায় বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেশি থাকায় সেখানে তিনটি কেন্দ্র স্থাপিত হবে। এর জন্য ৭ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।
  • নতুন ডিগ্রি কলেজ: আমবাসা, কাকড়াবন ও করবুকে নতুন ডিগ্রি কলেজ স্থাপন করা হবে বলে অর্থমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন।
  • ‘ত্রিপুরা প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা কেন্দ্র’: প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার জন্য মানসম্মত প্রশিক্ষণ প্রদানের উদ্দেশ্যে রাজ্যের তিনটি স্থানে এই কেন্দ্র স্থাপন করা হবে। এর জন্য ১.৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।
  • ওয়াকফ সম্পত্তির উন্নয়ন ও সংখ্যালঘু উন্নয়ন: ওয়াকফ সম্পত্তির উন্নয়নে ১.২০ কোটি টাকা, সংখ্যালঘু অধ্যুষিত গ্রামগুলির উন্নয়নে ৫ কোটি টাকা এবং সংখ্যালঘু ব্লকগুলির আর্থ-সামাজিক অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য ২০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।
  • সংখ্যালঘু শিক্ষার্থীদের জন্য স্টাইপেন্ড: সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের শিক্ষার্থীদের স্টাইপেন্ড প্রদানের জন্য ৯.৩৫ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।

নারী ও সমাজ কল্যাণঃ

  • ‘মুখ্যমন্ত্রী কন্যা বিবাহ যোজনা’: অন্ত্যোদয় পরিবারের একজন কন্যা সন্তানের বিয়ের জন্য রাজ্য সরকার ৫০,০০০ টাকা ব্যয় করবে। মহকুমা পর্যায়ে গণবিবাহ অনুষ্ঠিত হবে। এই প্রকল্পের জন্য ১০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।
  • ‘মুখ্যমন্ত্রী বালিকা সমৃদ্ধি যোজনা’: অন্ত্যোদয় পরিবারের নবজাতক কন্যা সন্তানের জন্য ৫০,০০০ টাকা বিনিয়োগ করা হবে, যা মেয়েটির ১৮ বছর বয়সের পর নগদ করতে পারবে। এই প্রকল্পের জন্য ১৫ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।
  • ‘মানসিকভাবে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য মুখ্যমন্ত্রীর প্রকল্প’: মানসিক প্রতিবন্ধীদের মাসিক ৫,০০০ টাকা পেনশন দেওয়া হবে। যাঁরা ইতিমধ্যেই প্রতিবন্ধী পেনশন হিসেবে ২,০০০ টাকা পাচ্ছেন, তাঁরা প্রতি মাসে অতিরিক্ত ৩,০০০ টাকা পাবেন। এই প্রকল্পের জন্য ৪০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।
  • ‘মানসিকভাবে প্রতিবন্ধী শিশুদের বিনোদন কেন্দ্র’: মানসিক প্রতিবন্ধী শিশুদের জন্য একটি বিশেষ বিনোদন কেন্দ্র স্থাপন করা হবে। এর জন্য ৫ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।

অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পঃ

  • ‘ভারত মাতা ক্যান্টিন কাম নাইট শেল্টার’: রাজ্যের অন্যান্য স্থান থেকে আগরতলায় আসা মানুষদের জন্য রাতে থাকার ও ভর্তুকিযুক্ত খাবারের ব্যবস্থা করতে ‘ভারত মাতা ক্যান্টিন কাম নাইট শেল্টার’ স্থাপন করা হবে। এর জন্য ২ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।
  • ‘আরএম পরিবারের জীবিকা উন্নয়ন প্রকল্প’: দরিদ্র আরএম পরিবারের জীবিকা উন্নীত করার জন্য নতুন প্রকল্প চালু করা হবে। এর জন্য প্রাথমিকভাবে ১.৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।
  • ‘কম্পিউটার-ভিত্তিক পরীক্ষার কেন্দ্র’: হাপানিয়া আন্তর্জাতিক মেলা গ্রাউন্ডে একটি কম্পিউটার-ভিত্তিক পরীক্ষার কেন্দ্র স্থাপন করা হবে, যাতে পরীক্ষার্থীদের অনলাইন পরীক্ষার জন্য রাজ্যের বাইরে যেতে না হয়। এর জন্য ১৫ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।

অর্থমন্ত্রী প্রনজিত সিংহ রায় বলেছেন, এই বাজেট রাজ্যের সার্বিক উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে ত্বরান্বিত করবে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, নারী ও সংখ্যালঘু উন্নয়নসহ প্রতিটি খাতে এই বাজেট নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে বলে তিনি আশাবাদী।About Us

বাজেট 2025-26 ত্রিপুরা

ত্রিপুরার সার্বিক বিকাশে ব্যতিক্রমী বাজেট অর্থমন্ত্রী প্রণজিৎ সিংহ রায়ের !!

২০২৫-২৬ অর্থবর্ষের জন্য পেশ করা বাজেটকে সর্বাঙ্গীণ ও সামগ্রিক উন্নয়নের লক্ষ্যে গৃহীত একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ বলে অভিহিত করলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা। শুক্রবার রাজ্য বিধানসভায় অর্থমন্ত্রী প্রণজিত সিংহ রায় রাজ্যের বাজেট পেশ করার পর মুখ্যমন্ত্রী এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেন, এই বাজেট রাজ্যের সার্বিক উন্নয়ন ও প্রগতির পথ সুগম করবে বলে তিনি আশাবাদী।

মুখ্যমন্ত্রী জানান, এই বাজেট প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ‘সবকা সাথ, সবকা বিকাশ এবং সবকা বিশ্বাস’ নীতির প্রতিফলন ঘটিয়েছে। এটি রাজ্যের জনগণের সার্বিক কল্যাণ ও উন্নয়নের কথা মাথায় রেখে পরিকল্পিতভাবে তৈরি করা হয়েছে।এবারের বাজেটের মোট পরিমাণ ৩২,০০০ কোটি টাকারও বেশি বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, এই বাজেটের আকার গত বছরের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে, তবে ঘাটতির পরিমাণ প্রায় ৪২৯ কোটি টাকা থাকলেও তা সামাল দিতে সক্ষম হবে সরকার, বলে জানিয়েছেন তিনি।

এবারের বাজেটে একাধিক জনকল্যাণমূলক ও উন্নয়ন প্রকল্পের ঘোষণা করা হয়েছে, যা রাজ্যের বিভিন্ন শ্রেণির মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নত করতে সাহায্য করবে। উল্লেখযোগ্য কয়েকটি নতুন প্রকল্প হলোঃ

  • ভারত মাতা ক্যান্টিন: রাজ্যের গরিব ও নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য সাশ্রয়ী মূল্যে খাবারের ব্যবস্থা।
  • প্রতিবন্ধীদের জন্য এন্টারটেইনমেন্ট সেন্টার: বিশেষভাবে সক্ষম ব্যক্তিদের বিনোদন ও মানসিক বিকাশের জন্য আধুনিক সুযোগ-সুবিধাসম্পন্ন কেন্দ্র।
  • মুখ্যমন্ত্রী কন্যা বিবাহ যোজনা: দরিদ্র পরিবারের কন্যাদের বিয়ের জন্য আর্থিক সহায়তা প্রদান।
  • মুখ্যমন্ত্রী বালিকা সমৃদ্ধি যোজনা: কন্যাশিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত করতে বিশেষ অনুদান প্রকল্প।
  • কম্পিউটার-ভিত্তিক পরীক্ষা কেন্দ্র: শিক্ষার্থীদের আধুনিক ও ডিজিটাল পদ্ধতিতে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার সুবিধা প্রদান।
  • ত্রিপুরা প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা কেন্দ্র: চাকরিপ্রার্থীদের জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণ ও সহায়তা কেন্দ্র।

এদিন একই সাথে সরকারি কর্মচারী ও পেনশনারদের জন্য ৩ শতাংশ ডি.এ. ও ডি.আর. বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যদিও মন্ত্রী বিধায়কদের বেতন ভাতা বৃদ্ধির পর সরকারি কর্মচারী ও পেনশনারা অনেক বেশি কিছু আশা করেছিল। উল্লেখ্য এই তিন শতাংশ মহার্ঘ ভাতা বৃদ্ধির পরও সরকারি কর্মচারীদের আরো ২০ শতাংশ মহার্ঘ্যতা বাকি রয়ে গেল।

যেখানে রাজ্য সরকার আশা প্রকাশ করছে, এই বাজেটের বাস্তবায়নের মাধ্যমে ত্রিপুরার শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও আর্থ-সামাজিক পরিকাঠামো আরও সমৃদ্ধ হয়ে উঠবে। সেই মুহূর্তে সাধারণ মানুষের একাংশের মতে, এই আয়-ব্যয়ের হিসাবে কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক উপেক্ষিত হয়েছে। বিশেষ করে বেকার যুবকদের জন্য স্থায়ী কর্মসংস্থানের কোনো সুস্পষ্ট রূপরেখা নেই। এছাড়া নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখার বিষয়ে তেমন কোনও কার্যকরী পদক্ষেপের নেওয়া হয়নি, যা মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত পরিবারের জন্য উদ্বেগের বিষয়। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ঘোষিত প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়ন কতটা কার্যকর হবে, তা সময়ই বলে দেবে, কারণ আগেও অনেক প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল এবং তার সিংহভাগেরই সঠিক বাস্তবায়ন হয়নি। তার মধ্যে উল্লেখ্য ২০১৮ বিধানসভা নির্বাচনে পরিবর্তনের মুখ্য বিষয় কর্মচারীদের সপ্তম বেতন কমিশন।About Us

ককবরক স্ক্রিপ্ট ইস্যুতে সরকারের নরম মনোভাব

ককবরক স্ক্রিপ্ট সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিলেন মুখ্যমন্ত্রী!

ত্রিপুরার ককবরক ভাষার স্ক্রিপ্ট ইস্যুতে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী অধ্যাপক ডাঃ মানিক সাহা আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন। শুক্রবার রাজ্য বিধানসভার বাজেট অধিবেশনে তিনি বলেন, বর্তমান সরকার সকল সম্প্রদায়ের ভাষা, সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যকে সম্মান করে। শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ রক্ষায় কোনও আপস করা হবে না বলেও তিনি স্পষ্ট করেন।

বিধানসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী জানান, ককবরক ভাষার স্ক্রিপ্ট নির্ধারণের বিষয়ে এর আগেও একাধিক আলোচনা হয়েছে। সরকার সব দিক বিবেচনা করেই সিদ্ধান্ত নিতে চায়। তিনি বলেন, “আমরা জানতে চাই, রোমান স্ক্রিপ্ট কেন এবং কেন দেবনাগরী স্ক্রিপ্ট নয়? এনিয়ে বহুবার আলোচনা হয়েছে, তবে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।” তিনি আরও বলেন, এই বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই আন্দোলন হয়েছে এবং আন্দোলনের নেতৃত্বে থাকা বেশ কয়েকজন তাঁর সাথে সাক্ষাৎও করেছেন। দিল্লিতে স্বাক্ষরিত ত্রিপাক্ষিক চুক্তির আওতায় ককবরক ভাষার স্ক্রিপ্টের বিষয়টিও অন্তর্ভুক্ত ছিল বলে তিনি উল্লেখ করেন। মুখ্যমন্ত্রী জানান, তারা বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করছে এবং একটি উপযুক্ত সমাধানে পৌঁছানোর চেষ্টা করবে।

মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট করেন যে, ককবরকের স্ক্রিপ্ট যদি স্বতন্ত্র ইন্ডিজেনাস হয়, তবে সরকারের কোনও আপত্তি নেই। তবে তিনি জোর দিয়ে বলেন যে, বর্তমান সরকার সমাধানের সরকার এবং এই সরকার ত্রিপুরার সমস্ত সম্প্রদায়ের ঐতিহ্য ও ভাষাকে সম্মান করে। তিনি আশ্বাস দেন, এনিয়ে একটি চূড়ান্ত সমাধান খুব দ্রুতই করা হবে।

বাজেট অধিবেশনে মুখ্যমন্ত্রী ককবরক ভাষার সিবিএসই পরীক্ষার প্রসঙ্গও তুলে ধরেন। তিনি জানান, এবছর মোট ১,৪১২ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ১,৩৩৯ জন পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে, তবে ৭৩ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষা দেয়নি। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যদি ইনভিজিলেটররা সঠিকভাবে দিকনির্দেশনা দেন, তবে পরীক্ষার্থীদের কোনও অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ রক্ষা করা এবং তাদের সকল ধরনের সমস্যার সমাধান করা সরকারের দায়িত্ব। সরকার এই বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলেও তিনি আশ্বাস দেন। শিক্ষার্থীদের স্বার্থকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলেও মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট করেন।

ত্রিপুরার ককবরক ভাষার স্ক্রিপ্ট নিয়ে বিতর্ক দীর্ঘদিনের। রোমান ও দেবনাগরী স্ক্রিপ্টের মধ্যে কোনটি ব্যবহার করা হবে, তা নিয়ে জনমত বিভক্ত। মুখ্যমন্ত্রীর সাম্প্রতিক মন্তব্যে বোঝা যাচ্ছে যে, সরকার কোনও একপাক্ষিক সিদ্ধান্ত না নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে সমাধানে পৌঁছাতে চায়। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত কী হবে, তা সময়ই বলে দেবে।About Us

সরকারি দলের বিরোধী ভূমিকা

সরকারি দলের সরকারের বিরুদ্ধে ডাকা বন্ধে নাজেহাল রাজ্যবাসী!

ত্রিপুরা রাজ্যে বিজেপি সরকারের শরিক দল তিপ্রা মথার ছাত্র সংগঠন তিপ্রা স্টুডেন্টস ফেডারেশন (TSF)-এর ডাকা বন্‌ধের জেরে রাজ্যের স্বাভাবিক জনজীবন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়েছে। রাজধানী আগরতলা-সহ রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় রাস্তা অবরোধ, বিক্ষোভ ও আগুন জ্বালানোর ঘটনায় সাধারণ মানুষের ভোগান্তি চরমে পৌঁছেছে। আগরতলার সার্কিট হাউস সংলগ্ন গান্ধী মূর্তির পাদদেশে সংগঠনের পক্ষ থেকে সড়ক অবরোধ করা হয়। এতে শহরের বিভিন্ন সড়কে ব্যাপক যানজট সৃষ্টি হয়, যা পরিবহন, জরুরি পরিষেবা ও সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন কার্যক্রমকে মারাত্মকভাবে প্রভাবিত করেছে।

রাজ্যের প্রধান রেফারেল হাসপাতাল জিবি পন্থ হাসপাতাল ও আগরতলা গভর্নমেন্ট মেডিকেল কলেজের (AGMC) দিকে যাওয়ার প্রধান সড়ক অবরোধের কারণে বহু অ্যাম্বুলেন্স ও রোগীকে অনেক সময় নষ্ট করে বহু পথ ঘুরে গন্তব্যে পৌঁছতে হয়েছে। বিশেষ করে, গুরুতর অসুস্থ রোগীদের সময়মতো হাসপাতালে পৌঁছানোর ক্ষেত্রে বড় ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। অনেক চিকিৎসক, নার্স ও অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মী হাসপাতালে পৌঁছাতে দেরি হয়, যার ফলে জরুরি চিকিৎসা পরিষেবা ব্যাহত হয়েছে।

অবরোধের কারণে ত্রিপুরার অন্যতম স্বনামধন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হলিক্রস স্কুলের পরীক্ষার্থীরা বড় ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হয়। অনেক পরীক্ষার্থী যথাসময়ে পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছাতে পারেনি, যা তাদের একাডেমিক ভবিষ্যতের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। রাজ্যের অন্যান্য স্কুল ও কলেজের স্বাভাবিক কার্যক্রমও ব্যাহত হয়। অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে এই পরিস্থিতি নিয়ে ব্যাপক অসন্তোষ তৈরি হয়েছে।

বিক্ষোভকারীরা আগরতলা ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সড়কে টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে প্রতিবাদ জানায়, ফলে যান চলাচল সম্পূর্ণ স্তব্ধ হয়ে যায়। সংগঠনের তরফে রাজ্যের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ব্যারিকেড বসিয়ে যানবাহন চলাচলে বাধা সৃষ্টি করা হয়। গান্ধী মূর্তির পাদদেশে সড়ক অবরোধ করার কারণে, রাজ্যের প্রধান অফিসিয়াল কেন্দ্রস্থল গুলির যাতায়াতের পদ অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে, ফলে অফিসগামী মানুষ, ব্যবসায়ী, রোগী ও সাধারণ নাগরিকদের চলাচল কঠিন হয়ে পড়ে। শুক্রবার বিধানসভার বাজেট অধিবেশন থাকায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে প্রশাসন আগেভাগেই কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়। অতিরিক্ত পুলিশ ও আধাসামরিক বাহিনী মোতায়েন করা হয়, যাতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে না যায়।

তিপ্রা স্টুডেন্টস ফেডারেশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই আন্দোলন মূলত ককবরক ভাষার জন্য রোমান লিপির স্বীকৃতি আদায়ের লক্ষ্যে করা হয়েছে। সংগঠন জানিয়েছে, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে এবং প্রয়োজনে আরও কঠোর কর্মসূচি নেওয়া হবে। এই আন্দোলনের মাধ্যমে তিপ্রা মথার ছাত্র সংগঠন সরাসরি সরকারের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে, যা রাজনৈতিক মহলে আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। সরকারের শরিক হয়েও সংগঠনটি রাজ্যের জনজীবন বিপর্যস্ত করে যে আন্দোলনে নেমেছে, তা নিয়ে জনসাধারণের মধ্যে প্রশ্ন উঠেছে। অনেকেই একে রাজনৈতিক চাপে ফেলার কৌশল হিসেবে দেখছেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, সরকারের শরিক দল হিসেবে তিপ্রা মথার ভূমিকা স্পষ্ট নয়। একদিকে সরকার পরিচালনার দায়িত্বে থাকা, অন্যদিকে সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ সংগঠিত করা—এই দ্বৈত অবস্থান ভবিষ্যতে রাজ্যের রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে।

প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে এবং আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। তবে সাধারণ মানুষ এই আন্দোলনের ফলে সৃষ্ট দুর্ভোগ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। শিক্ষা ও স্বাস্থ্য পরিষেবাকে ব্যাহত করে এ ধরনের আন্দোলন কতটা গ্রহণযোগ্য, সে বিষয়ে প্রশ্ন উঠেছে বিভিন্ন মহলে।

TSF-এর আন্দোলন ককবরক ভাষার স্বীকৃতির দাবিতে হলেও, এর ফলে সাধারণ মানুষ চরম দুর্ভোগের শিকার হয়েছে। সরকারের শরিক দল হয়ে এই আন্দোলন কতটা নৈতিক, তা নিয়ে রাজনৈতিক ও সাধারণ মহলে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়েছে। এখন দেখার বিষয়, সরকার ও তিপ্রা মথার মধ্যে এই অবস্থানগত ফারাক কীভাবে সামলানো হয় এবং রাজ্যের রাজনৈতিক পরিস্থিতি কোন দিকে মোড় নেয়।About Us

ADC নিজস্ব পুলিশ বাহিনী গঠন

ADC-র পুলিশ বাহিনী তৈরির নামে অস্ত্র ব্যবহারের ইঙ্গিত!

ক্ষমতা

এক চাঞ্চল্যকর ঘোষণায় ত্রিপুরা স্বশাসিত জেলা পরিষদ (ADC) প্রশাসন নিজস্ব পুলিশ বাহিনী গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এডিসির মুখ্য নির্বাহী সদস্য (সিইএম) পূর্ণচন্দ্র জমাতিয়া পরিষদের অধিবেশনে জানিয়েছেন, প্রথম পর্যায়ে এক ব্যাটালিয়ন, অর্থাৎ প্রায় ১২০০ জন সদস্য নিয়ে এই বাহিনী গঠিত হবে। তবে এই সিদ্ধান্ত নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে ইতিমধ্যেই বিতর্কের ঝড় উঠেছে।

রাজ্যের অনুমতি ছাড়া নিজস্ব বাহিনী গঠন কি আইনসিদ্ধ?

প্রশাসনিক বিশেষজ্ঞের মতে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করা রাজ্য সরকারের দায়িত্ব এবং ADC-র নিজস্ব পুলিশ বাহিনী গঠনের কোনো আইনি অধিকার নেই। ত্রিপুরা উপজাতি এলাকা স্বশাসিত জেলা পরিষদ (ত্রিপুরা ট্রাইবাল এরিয়া অটোনমাস ডিস্ট্রিক্ট কাউন্সিল – টিটিএএডিসি) ১৯৮৫ সালে গঠিত হলেও, এর প্রশাসনিক কাঠামোতে নিজস্ব পুলিশ বাহিনী গঠনের সুযোগ নেই। “ADC-র কার্যপরিধির মধ্যে পুলিশ বাহিনী গঠন করার বিধান নেই। এটি স্বরাষ্ট্র দফতরের অধীন এবং রাজ্য সরকারের এক্তিয়ারে পড়ে।” তবে ADC-র পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, উপজাতি অধ্যুষিত এলাকায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আরও কার্যকরভাবে নিয়ন্ত্রণ করতেই এই বাহিনী গঠন করা হবে। প্রশ্ন উঠছে, রাজ্য সরকারকে অবহিত না করেই কীভাবে এডিসি প্রশাসন এমন সিদ্ধান্ত নিল?

বিজেপির নীরবতা ঘিরে রহস্য!

যদিও বিজেপি সরকার এবং ত্রিপুরা প্রদেশ বিজেপি এডিসির এই সিদ্ধান্তের পক্ষপাতী নয়, কিন্তু এডিসির অধিবেশনে এই ঘোষণা নিয়ে বিজেপির এমডিসিরা কোনো আপত্তি জানাননি। এটা আরও বড় প্রশ্ন তুলে দিয়েছে রাজনীতির মহলে। বিরোধীদের দাবি, বিজেপি সরকার দ্বিমুখী নীতি অনুসরণ করছে। এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, রাজ্য সরকার এই সিদ্ধান্তে সম্মতি দেবে কি না। কারণ, ADC নিজস্ব পুলিশ বাহিনী গঠন করলেও, এর জন্য অর্থের প্রয়োজন হবে রাজ্য সরকারের কাছ থেকে।

রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গিঃ

বিশ্লেষকদের মতে, ADC-র নিজস্ব পুলিশ বাহিনী গঠনের ঘোষণা শুধু প্রশাসনিক নয়, রাজনৈতিক ইঙ্গিতবাহীও। তিপ্রা মথার শাসনে থাকা ADC কি স্বশাসনের আরও অধিকারের দিকে এগোতে চাইছে? রাজ্য সরকারের এই বিষয়ে কী অবস্থান নেয়, সেটাই এখন দেখার বিষয়। তবে ত্রিপুরার ADC প্রশাসনের নিজস্ব পুলিশ বাহিনী গঠনের সিদ্ধান্ত চরম বিতর্কিত ও আইনবিরুদ্ধ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। রাজ্য সরকারের অনুমতি ছাড়া এমন বাহিনী গঠন করা হলে তা প্রশাসনিক সংকট সৃষ্টি করতে পারে এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটতে পারে। অনেকেই এটিকে ADC-র “গোপন এজেন্ডা” বলে অভিহিত করছেন, যা রাজ্য সরকারকে চ্যালেঞ্জ জানানোর শামিল। যদি রাজ্য সরকারের অর্থেই এই বাহিনী পরিচালিত হয়, তবে সেটি সম্পূর্ণ আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত হবে, কারণ ADC-র নিজস্ব রাজস্ব তহবিল নেই। তাছাড়া, এই বাহিনীর নিয়ন্ত্রণ কীভাবে হবে, সেটাও বড় প্রশ্ন, কারণ একে সরকারিভাবে কোনো স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি।

এখন সাধারণ মানুষের মনে আশঙ্কা, রাজ্য সরকারের বিপরীতে গিয়ে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া প্রশাসনিক বিশৃঙ্খলা ডেকে আনতে পারে। আরও আশ্চর্যের বিষয় হলো, ADC-র অধিবেশনে বিজেপির এমডিসিরা এ নিয়ে কোনো আপত্তি জানাননি, যা রাজনৈতিক মহলে নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। এতে অনেকেই মনে করছেন, এটি হয়তো একটি গোপন রাজনৈতিক সমঝোতার অংশ, যা ভবিষ্যতে রাজ্যের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে বড় প্রভাব ফেলতে পারে। ত্রিপুরার জনগণও এডিসির এই সিদ্ধান্ত নিয়ে বিভক্ত—কেউ মনে করছেন এটি উপজাতি অধ্যুষিত অঞ্চলের ক্ষমতা বাড়ানোর প্রচেষ্টা, আবার কেউ বলছেন এটি অযৌক্তিক ও বিপজ্জনক। এত বড় প্রশাসনিক সিদ্ধান্তের আগে কেন্দ্রীয় সরকার বা রাজ্য প্রশাসনের সঙ্গে কোনো পরামর্শ না করায়, অনেকেই একে একতরফা এবং দায়িত্বজ্ঞানহীন পদক্ষেপ বলে মনে করছেন।

অস্ত্র ব্যবহারের ইঙ্গিত!

ADC-র নিজস্ব পুলিশ বাহিনী গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়ে বিতর্কের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে— রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, রাজ্য সরকারের অনুমতি ছাড়া বাহিনী গঠনের পেছনে কোনো গোপন উদ্দেশ্য থাকতে পারে, যা ভবিষ্যতে আইনশৃঙ্খলার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে। অনেকেই সন্দেহ করছেন, ADC-র এই সিদ্ধান্ত কেবলমাত্র আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য নয়, বরং রাজনৈতিক ক্ষমতা বাড়ানোর একটি কৌশল। প্রশাসনিক মহলে প্রশ্ন উঠেছে—একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান কি রাজ্যের অনুমতি ছাড়াই বাহিনী গঠন করতে পারে? এডিসির নিজস্ব পুলিশ বাহিনী গঠনের উদ্যোগ কি বাস্তবায়িত হবে? রাজ্য সরকার কি তাতে অনুমোদন দেবে? নাকি এই সিদ্ধান্ত আইনি জটিলতায় আটকে যাবে? সেই প্রশ্নের উত্তর মিলবে আগামী দিনগুলিতেই।About Us