ত্রিপুরা

ত্রিপুরা বিধানসভার শীতকালীন অধিবেশনে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিল উত্থাপিত হবে

ত্রিপুরা বিধানসভার শীতকালীন অধিবেশন শুরু হচ্ছে আগামী শুক্রবার থেকে। এবারের অধিবেশনে বিভিন্ন ইস্যুতে শাসক শিবিরকে চাপে ফেলার কৌশল নিয়েছে বিরোধীরা। রাজ্যের প্রধান বিরোধীদল সিপিএম ইতিমধ্যেই বিভিন্ন দাবি-দাওয়া নিয়ে মাঠে নেমেছে। সিপিএমের যুব সংগঠন ডিওয়াইএফআই প্রতিদিন রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় মিছিল ও সভা করে শাসকদলের বিরুদ্ধে কামান দাগছে৷ তীব্র বেকার সমস্যা, চাকুরী সংকোচন নীতির বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তুলেছে। সবটাই হচ্ছে আগামী বিধানসভা নির্বাচনকে টার্গেটে রেখে ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য।

এটাও ঠিক বাম যুব সংগঠনের মিছিল গুলোতে উল্লেখযোগ্য সংখ্যায় যুবারা ভীড়তে শুরু করেছেন। ঘর থেকে বেরিয়ে আসতে শুরু করেছে যুবরা। এটাই বিরোধী দল সিপিএমের কাছে ইতিবাচক দিক। পাশাপাশি আইনের শাসন নিয়ে এবার বিধানসভায় বিরোধী দল সরব হবে বলে খবর। গত সেপ্টেম্বর মাসে শরৎকালীন অধিবেশনে বিরোধী দলনেতা জিতেন্দ্র চৌধুরী বিধানসভার অধিবেশনের মেয়াদ দিন দিন কমে যাওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন। রাজ্যের মানুষের জন্য বিধানসভায় কথা বলার সুযোগ কমে যাচ্ছে। এবারও বিধানসভার অধিবেশন বসছে তিন দিন। অসুস্থতার কারণে বিএসি মিটিংয়ে উপস্থিত ছিলেন না বিরোধী দলনেতা জিতেন্দ্র চৌধুরী। ছিলেন উপনেতা শ্যামল চক্রবর্তী। ফলে অধিবেশনে কথা বলার সময় বাড়ানোর দাবিও হতে পারে। উল্লেখ করা যেতে পারে সেপ্টেম্বর মাসের শরৎকালীন অধিবেশনে কংগ্রেসের বিধায়ক সুদীপ রায় বর্মনও একই সুরে অধিবেশনের সময়কাল বাড়ানোর দাবি করেছিলেন। যদিও বিএসসি মিটিং শেষে পরিষদীয় মন্ত্রী রতন লাল নাথ তো জানিয়েছিলেন সর্বসম্মতিক্রমেই বিধানসভার অধিবেশন তিনদিন করার সিদ্ধান্ত হয়েছে । বছরের প্রথম অধিবেশন হওয়ায় প্রথা অনুসারে রাজ্যপাল ইন্দ্রসেনা রেড্ডি নাল্লুর ভাষণের মধ্য দিয়ে অধিবেশন শুরু হবে। এরপর রাজ্যপালের ভাষণের উপর আলোচনা করবেন ত্রিপুরা বিধানসভার সদস্যরা। রাজ্যপাল তার ভাষণে তার সরকারের সফল্যগুলো তুলে ধরবেন। আগামী মার্চ মাসেই আবার বাজেট অধিবেশন। তবে এবারের অধিবেশনে মুখ্যমন্ত্রী, মন্ত্রী, বিধায়কদের বেতনভাতা সংক্রান্ত বিল আসতে পারে।

এবারের ত্রিপুরা বিধানসভার অধিবেশনে বিধায়কদের পেনশন নিয়ে আলোচনা হতে পারে। এমনিতেই এখন ত্রিপুরা বিধানসভার আইন অনুসারে সাড়ে চার বছর বিধানসভার সদস্য না থাকলে পেনশন পাওয়া যায় না। এই আইনের সংশোধন করা হতে পারে বলে খবর। পাশাপাশি বিধায়কদের বেতন ভাতা ও সম্মানিক বাড়ানোর বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে। ২০১৯ সালের আগষ্ট মাসে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী-সহ উপ-মুখ্যমন্ত্রী, অন্য মন্ত্রী, অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষ, বিরোধী দলনেতা, মুখ্যসচেতক এবং বিধায়কদের বেতন-ভাতা দ্বিগুণভাবে বাড়ানো হয়েছিল। পাশাপাশি প্রাক্তন বিধায়কদের বিভিন্ন বিষয় নিয়েও বিল আসছে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন মন্ত্রী রতন লাল নাথ। তিনি জানান দুটি বিল পেশ করার কথা রয়েছে। পরবর্তী সময়ে আরো একটি বিল আসতে পারে। ১০ জানুয়ারি থেকে অধিবেশন শুরু হবে চলবে ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত। ১১ এবং ১২ই জানুয়ারি বন্ধ। ১৩ জানুয়ারি আবার অধিবেশন শুরু হবে। ১৪ জানুয়ারি বন্ধ থাকবে অধিবেশন। আবার অধিবেশন বসবে ১৫ জানুয়ারি। সেদিনই অধিবেশন শেষ হবে।

পুর

পুর নিগমের শারদ সম্মাননায় ৫টি ক্লাবকে পুরস্কৃত করা হবে

পুর নিগম শারদ সম্মাননা ২০২৪ এর পুরস্কার প্রদান করবে আগামী ১৬ই জানুয়ারী। সন্ধ্যা ৬ টায় আগরতলার রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনের ১নং হলে আয়োজিত হতে যাচ্ছে পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠান।

বৃহস্পতিবার এক সাংবাদিক সম্মেলনে এ খবর জানার মেয়র দীপক মজুমদার,মেয়র ছাড়াও আজকের এই সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ডেপুটি মনিকা দাস দত্ত, এমআইসি মেম্বার রত্না দত্ত, এমআইসি নাম্বার বাপি দাস, এমআইসি মেম্বার প্রদীপ চন্দ্র সহ অন্যান্যরা। প্রসঙ্গত ৩০ সে ডিসেম্বর এই অনুষ্ঠান হওয়ার কথা ছিল কিন্তু ভারতবর্ষের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং প্রয়াত হওয়ায় এই অনুষ্ঠান বাতিল করা হয়। ৫টি ক্লাবকে সেরার সেরা পুরস্কার প্রদান করা হবে। ক্যাটাগরি গুলি হল; সেরা প্রতিমা, সেরা মন্ডপ ,সেরা আলোকসজ্জা, সেরা থিম, মহিলাদের দ্বারা আয়োজিত সেরা দুর্গাপুজা। সেরা প্রতিমা হিসেবে পুরস্কার পাচ্ছে ফ্লাওয়ার্স ক্লাব, সেরা মন্ডপ নেতাজি প্লে সেন্টার, সেরা আলোকসজ্জা এগিয়ে চলো সংঘ, সেরা থিম যুবসমাজ এবং মহিলাদের দ্বারা পরিচালিত পূজা হিসেবে পুরস্কার পাচ্ছেন রামনগরের মুক্তি সংঘ ক্লাব। এছাড়াও অন্যান্য ক্যাটাগরি মিলিয়ে মোট ২১ টি ক্লাবকে এদিন পুরস্কৃত করা হবে। এদিনের এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডক্টর মানিক সাহা, পর্যটনমন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী, সাংসদ রাজীব ভট্টাচার্য সহ অন্যান্যরা। প্রসঙ্গত সেরা সেরা প্লাস্টিক ক্লাবকে ৫০ হাজার টাকা এবং সুদৃশ্য ট্রফি প্রদান করা হবে। পাশাপাশি অন্যান্য জোনালের বিজয়ী ক্লাব গুলিকে ২৫ হাজার টাকা এবং সুদৃশ্য ট্রফি প্রদান করা হবে।

ত্রিপুরা

ত্রিপুরা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোগে গ্রন্থাগার নিয়ে পুনরায় ভাবনা

ত্রিপুরা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোগে বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের অডিটরিয়ামে শিক্ষা ক্ষেত্রে গ্রন্থাগার নিয়ে পুনরায় ভাবনা শীর্ষক এক আন্তর্জাতিক সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

সম্মেলনে ২০৪৭ সালের মধ্যে বিকশিত ভারত গঠনের ভুমিকা শীর্ষক এক আলোচনাচক্রে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যগন অংশ নেন। আলোচনার সুত্রপাত করে ত্রিপুরা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক গঙ্গাপ্রসাদ প্রসেইন বলেন, প্রাচীন ভারতে নালন্দা, তক্ষশিলা, বিক্রমশিলার মতো বিশ্ববিদ্যালয় গুরুকূল শিক্ষার মাধ্যমে গোটা বিশ্বে শিক্ষা সম্প্রসারনে ভারতকে এক বিশ্বগুরুর মর্যাদায়,নিয়ে গেছে। পরবর্তী সময়ে মুসলিম শাসন, ইংরেজ শাসনে এই ব্যবস্থা নষ্ট হয়ে যায়।ভারতকে পুনরায় বিশ্বগুরুর মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত করতে, শিক্ষা অন্যতম প্রধান উপায়। নয়া শিক্ষা নীতি ২০২০ বিকশিত ভারত গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা নেবে বলে তিনি মন্তব্য করেন। আলোচনাচক্রে দক্ষিন বিহারের কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক কামেশ্বর নাথ সিং বলেন, বিকশিত ভারত গঠনে শিক্ষা ও দক্ষতা বিকাশের ভুমিকা গুরুত্বপূর্ণ। বিকশিত ভারত গঠনে চার ক্ষেত্র যুব সম্প্রদায়, মহিলা, কৃষক ও গরীব অংশের জনগনের সামগ্রিক উন্নয়নে গুরুত্ব দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার।সম্পদ ও ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ, দেশের মজবুত গনতন্ত্র ও বিরাট সংখ্যক যুবসম্প্রদায় ভারতের মুল চালিকা শক্তি হিসাবে উল্লেখ করেন তিনি। সিকিম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক জ্যোতি প্রকাশ তামাং বলেন, ২৯৪৭ সালের মধ্যে দেশকে বিকশিত করতে শুধু সামগ্রিক উন্নয়নের পাশাপাশি প্রতিটি দেশবাসীর সুস্থ দেহ ও সুস্থ মানসিকতা অর্জন করতে হবে। আলোচনায় টেকনো ইন্ডিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক রতন কুমার সাহা উন্নত টেকনলজির উপর গুরুত্ব দেন।

রাজ্যপাল

রাজ্যপাল দপ্তরের বিভিন্ন কাজকর্ম ঘুরে দেখেন,ও কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন।

রাজ্যপাল ইন্দ্রসেনা রেড্ডি নাল্লু বৃহস্পতিবার বাধারঘাট মাতৃপল্লী স্থিত রিগ ডিভিশন এবং পানীয় জল ও স্বাস্থ্যবিধান বিভাগের সহকারী বাস্তুুকার কার্যালয়ের অফিসটি পরিদর্শন করেন। পরিদর্শন কালে রাজ্যপালের সঙ্গে ছিলেন পূর্ত দপ্তরের সচিব অভিষেক সিং। পশ্চিম জেলার জেলাশাসক ডক্টর বিশাল কুমার রাজ্যপালের যুগ্ম সচিব রতন ভৌমিক দপ্তর এর মুখ্য বাস্তুকার রাজিব মজুমদার সহ আরো অনেকে। রাজ্যপাল দপ্তরের বিভিন্ন কাজকর্ম ঘুরে দেখেন,ও কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। পরে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে রাজ্যপাল বলেন বিশুদ্ধ পানীয় জল পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে কেন্দ্রীয় সরকার হর ঘর জল প্রকল্প। রাজ্যও এই প্রকল্পে সুবিধা পাচ্ছেন মানুষ। রাজ্যে স্থায়ী ওয়াটার সাপ্লাই সিস্টেম কিভাবে চলছে তা দপ্তরের মুখ্য বাস্তুকার সহ অন্যান্য আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলা জানতে পেরেছি। ঘরে ঘরে বিশুদ্ধ পানীয় জল পৌঁছে দেওয়ার জন্য দপ্তরের আধিকারিকরা সার্বিক প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছেন। তাঁরা আগামী দিনে সমস্ত রাজ্যে ঘরে ঘরে পানীয় জল পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে নিজেদের কর্ম দক্ষতাকে আরো বেশি করে কাজে লাগানোর পরামর্শ দেন তিনি।

ভারত

ভারত এর বিদেশ নীতি আরও একধাপ এগিয়ে গেল!

ভারতের বিদেশ সচিব বিক্রম মিস্রি এবং আফগানিস্তানের তালিবান সরকারের কার্যনির্বাহী বিদেশমন্ত্রী মাওলাভি আমির খান মুত্তাকির মধ্যে সম্প্রতি দুবাইয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই বৈঠকটি তালিবান সরকারের সঙ্গে ভারতের প্রথম উচ্চপর্যায়ের সরাসরি সংযোগ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে, যা দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে।

বৈঠকের প্রেক্ষাপট:

২০২১ সালে আফগানিস্তানে তালিবান পুনরায় ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে ভারত সরকার তাদের আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেয়নি। তবে নয়াদিল্লি কাবুলের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ বজায় রেখেছে, বিশেষ করে মানবিক সহায়তা এবং উন্নয়নমূলক প্রকল্পের মাধ্যমে। সম্প্রতি পাকিস্তানের সঙ্গে তালিবান সরকারের সীমান্ত সংঘাত এবং আফগানিস্তানে পাকিস্তানি বায়ুসেনার হামলার পরিপ্রেক্ষিতে এই বৈঠকটি বিশেষ তাৎপর্য বহন করে।

বৈঠকের মূল আলোচ্যসূচি:

চাবাহার বন্দর: ইরানের চাবাহার বন্দর ব্যবহারের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে, যা পাকিস্তানকে বাইপাস করে ভারতের সঙ্গে আফগানিস্তানের বাণিজ্যিক সংযোগ বাড়াতে সহায়ক হবে।

নিরাপত্তা বিষয়ক উদ্বেগ: ভারতের নিরাপত্তা উদ্বেগের প্রতি তালিবান সরকার সংবেদনশীলতা প্রকাশ করেছে এবং আফগানিস্তানের মাটি থেকে ভারতবিরোধী কার্যকলাপ না হওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

মানবিক সহায়তা: ভারত আফগানিস্তানে ৫০,০০০ মেট্রিক টন গম, ৩০০ টন ওষুধ, ২৭ টন ভূমিকম্প ত্রাণ, ৪০,০০০ লিটার কীটনাশক, ১০০ মিলিয়ন পোলিও ডোজ, ১.৫ মিলিয়ন কোভিড টিকার ডোজ এবং ১.২ টন স্যানিটারি কিট সরবরাহ করেছে।

ক্রিকেট সহযোগিতা: দুই দেশের মধ্যে ক্রীড়া, বিশেষ করে ক্রিকেট ক্ষেত্রে সহযোগিতা বাড়ানোর বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশ এখনও তালিবান সরকারকে স্বীকৃতি দেয়নি। তবে ভারতের সঙ্গে এই বৈঠক আন্তর্জাতিক মহলে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই বৈঠক দক্ষিণ এশিয়ার ভূ-রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। দুবাইয়ে অনুষ্ঠিত এই বৈঠক ভারত এবং আফগানিস্তানের মধ্যে সম্পর্কের নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছে। যদিও ভারত সরকার এখনও তালিবান সরকারকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেয়নি, তবুও এই ধরনের উচ্চপর্যায়ের সংলাপ ভবিষ্যতে দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা বাড়াতে সহায়ক হবে।