বই

বইমেলার উদ্বোধন করলেন মুখ্যমন্ত্রী

বই চেতনার সীমা বাড়ায়। নতুন বইয়ের গন্ধে যে আত্ম তৃপ্তি আসে তা আর কোথাও পাওয়া যায় না। তাই পরবর্তী প্রজন্মকে বই পড়ার প্রতি আকৃষ্ট করতে হবে। এজন্য অভিভাবকদের আরও বেশী দায়িত্ব নিতে হবে। আজ সন্ধ্যায় হাঁপানিয়া আন্তর্জাতিক মেলা প্রাঙ্গণে পন্ডিত দীনদয়াল উপাধ্যায় মঞ্চে ৪৩তম আগরতলা বইমেলার উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা একথা বলেন। বইমেলার উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বইমেলার জন্য রাজ্যবাসী সারা বছর অপেক্ষা করে থাকেন। ছাত্রছাত্রীদের পরীক্ষার কথা বিবেচনা করে এবছর বইমেলা এগিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, আগে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বই উপহার দেওয়ার প্রচলন ছিল। এই অভ্যাস আবার ফিরিয়ে আনা উচিত। আমাদের সবারই বই পড়া অভ্যাসে পরিণত করতে হবে। তিনি বলেন, মেধা ও মননের উৎসব হল বইমেলা। জ্ঞান অর্জনের ভিত্তি হল বই। আমাদের রাজ্যে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় প্রতি বছরই বইমেলার আয়োজন করা হচ্ছে। উল্লেখ্য, ১৩ দিনব্যাপী ৪৩তম আগরতলা বইমেলা চলবে আগামী ১৪ জানুয়ারি পর্যন্ত। এবারের বইমেলায় ১৭৮টি স্টল রয়েছে। এর মধ্যে বহি:রাজ্যের ৪২টি স্টল রয়েছে।

অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বইমেলায় যাতে সবাই আসতে পারেন সেজন্য বিনামূল্যে বাস পরিষেবারও ব্যবস্থা করা হয়েছে। আগরতলা বইমেলায় প্রতি বছরই বই বিক্রির সংখ্যা বাড়ছে। প্রকাশক, বিক্রেতা ও স্টলের সংখ্যাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাতেই বোঝা যায় আগরতলা বইমেলার উত্তরোত্তর শ্রীবৃদ্ধি হচ্ছে। আগরতলা বইমেলা নিয়ে তাই আমরা গর্ববোধ করি। বইমেলায় এবারও নতুন বইয়ের প্রকাশ, আলোচনা সভা, ক্যুইজ, কবি সম্মেলন প্রভৃতির ব্যবস্থা করা হয়েছে। এবছর বইমেলার মূল ভাবনা হলো ‘সর্বেষাং শান্তির্ভবতু’। যার অর্থ হলো সবার প্রতি শান্তি বর্ষিত হোক। মুখ্যমন্ত্রী সবার প্রতি আহ্বান জানান বই পড়ুন, বই পড়ান ও জ্ঞান বৃদ্ধি করুন। বইমেলার উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী বইমেলার স্মরণিকা এবং বইমেলার মূল ভাবনার উপর বাংলা ও ককবরকে থিম সংয়ের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।

বইমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রী সান্ত্বনা চাকমা বলেন, বইমেলা হল লেখক, প্রকাশক ও গ্রন্থপ্রেমীদের মিলন মেলা। বই কখনো পুরনো হয়না। যখনই বই পড়ব তখন নতুন মনে হবে। তিনি বলেন, আগরতলা বইমেলার বিস্তার এবং বই প্রেমীদের উৎসাহ আগের তুলনায় অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। বইমেলায় এসে বই কেনার জন্য তিনি সবার প্রতি আহ্বান জানান। বইমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন কলকাতার বিশিষ্ট লেখক জয়দীপ চট্টোপাধ্যায়।অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিধায়ক মিনারাণী সরকার। তিনি সংক্ষিপ্ত আলোচনায় আগরতলা বইমেলায় আসার জন্য রাজ্যবাসীর প্রতি আহ্বান জানান। সবাইকে স্বাগত জানিয়ে তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের সচিব ড. পি কে চক্রবর্তী বলেন, রাজ্যে সাহিত্য চর্চায় বইমেলারও বিশেষ অবদান রয়েছে। ছাত্রছাত্রীদের কথা চিন্তা করে এবারের বইমেলা জানুয়ারি মাসে এগিয়ে আনা হয়েছে। তিনি আগরতলা বইমেলার সর্বাঙ্গীণ সাফল্য কামনা করেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সম্মানিত অতিথি ত্রিপুরা বিধানসভার উপাধ্যক্ষ রামপ্রসাদ পাল, আগরতলা পুরনিগমের মেয়র ও বিধায়ক দীপক মজুমদার, পশ্চিম ত্রিপুরা জিলা পরিষদের সভাধিপতি বলাই গোস্বামী, তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের অধিকর্তা বিম্বিসার ভট্টাচার্য ও রাজ্যভিত্তিক সাংস্কৃতিক উপদেষ্টা কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান সুব্রত চক্রবর্তী। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর মুখ্যমন্ত্রী এবং অন্যান্য অতিথিগণ বইমেলা ঘুরে দেখেন। প্রতিদিন বইমেলা শুরু হবে দুপুর ২টা ৩০ মিনিটে। মেলা চলবে রাত ৯টা পর্যন্ত। ছুটির দিনগুলিতে বইমেলা শুরু হবে দুপুর ২টায়। মেলা চলবে রাত সাড়ে ৯টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত।

আগরতলা বইমেলায় জাতীয় স্বাস্থ্যমিশন ত্রিপুরার নি-ক্ষয় শিবির খোলা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী আজ আনুষ্ঠানিকভাবে এই শিবিরের এবং স্বাস্থ্য সংবাদ নভেম্বর সংখ্যার উদ্বোধন করেন। তিনি চারজন নি-ক্ষয় মিত্রকে শংসাপত্র প্রদান করেন। এই শিবিরে টিবি রোগের জীবানু সনাক্ত করার ব্যবস্থা রয়েছে। শিবিরে নিয়মিত চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা পরিষেবাও দেওয়া হবে। মেলায় একটি নি-ক্ষয় বাহনও রয়েছে। নি-ক্ষয় বাহণে সিবি-নেট মিশিনের মাধ্যমে টিবি রোগের জীবানু পরীক্ষা করা হবে।

রাজ্যে

রাজ্যের মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরীর পৌরোহিত্যে সচিবালয়ে শীর্ষস্তরের বৈঠক অনুষ্ঠিত!

রাজ্যের; খাদ্য, জনসংভরণ ও ক্রেতা সুরক্ষা দপ্তরের মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরীর পৌরোহিত্যে বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় অবস্থিত বিশ্ববিদ্যালয় ও মহাবিদ্যালয় গুলোতে ভোক্তা সুরক্ষা আইন, সড়ক নিরাপত্তা এবং মাদকবিরোধী কর্মশালা ও সচেতনতামূলক প্রচারণার অঙ্গ হিসেবে ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে কুইজ প্রতিযোগিতা ও ৱ্যালি আয়োজনের জন্য একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও মহা বিদ্যালয়ের প্রিন্সিপালদের সাথে ভার্চুয়াল কনফারেন্স এর মাধ্যমে আলোচনা করা হয়। মন্ত্রী শ্রী চৌধুরী সংশ্লিষ্ট কর্মসূচিকে আয়োজন করার জন্য বিভিন্ন কলেজে তারিখ নির্ধারনের পাশাপাশি এই সচেতনতামূলক কর্মসূচিকে সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় সফল করার জন্য প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও নির্দেশ প্রদান করেন । বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন খাদ্য, জনসংভরণ ও ক্রেতাস্বার্থ বিষয়ক দপ্তর এবং শিক্ষা দপ্তরের বিশেষ সচিব রাভাল হেমেন্দ্র কুমার সহ অন্যান্য উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য জনসংভরণ ও ক্রেতাস্বার্থ বিষয়ক দপ্তর,পরিবহন দপ্তর, ট্রাফিক পুলিশ এবং উচ্চ শিক্ষা দপ্তর সম্মিলিত ভাবে এই কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।

উদয়পুরের

উদয়পুরের রমেশ উচ্চতর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৭৫তম প্রতিষ্ঠা দিবস!

উদয়পুরের রমেশ ইংরেজি মাধ্যম উচ্চতর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৭৫তম প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষ্যে বর্ষব্যাপী প্ল্যাটিনাম জুবিলি উদযাপন অনুষ্ঠানের উদ্বোধন হয়। প্রদীপ প্রজ্জলন করে অনুষ্ঠানের সূচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাক্তার মানিক সাহা। এছাড়াও অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের অর্থমন্ত্রী প্রণজিৎ সিংহ রায়, গোমতী জেলার জিলা সভাধিপতি দেবল দেবরায়, বিধায়ক অভিষেক দেবরায়, বিধায়ক জিতেন্দ্র মজুমদার, উদয়পুর পুর পরিষদের চেয়ারপার্সন শীতল চন্দ্র মজুমদার, গোমতী জেলার জেলাশাসক তড়িৎ কান্তি চাকমা প্রমূখ। মুখ্যমন্ত্রী বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেন রমেশ স্কুল শুধু উদয়পুরে নয় গোটা রাজ্যে এমনকি বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তেও সমাদৃত। রমেশ স্কুলের ছাত্ররা ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার থেকে শুরু করে এমনকি বিজ্ঞানী হিসেবেও কাজ করছেন। এটা শুধু উদয়পুরের গর্ব নয় সারা রাজ্যের গর্ব। তিনি বলেন, এই স্কুলের সুনামকে ধরে রাখার দায়িত্ব এই বিদ্যালয়ের বর্তমান ছাত্র-ছাত্রীদের। এ প্রসঙ্গে রাজ্যের শিক্ষার প্রসারের জন্য রাজ্য সরকার এবং কেন্দ্রীয় সরকার যে সমস্ত প্রকল্প গুলি নিয়ে হাতে নিয়েছে সেগুলি সম্পর্কেও তিনি বিস্তারিত আলোচনা করেন। এর আগে রাজ্যের অর্থমন্ত্রী প্রণজিৎ সিংহ রায় এ বিদ্যালয়ের উন্নতি কল্পে বর্তমান সরকার যে সমস্ত কর্মসূচি হাতে নিয়েছে তার একটা রূপরেখ তুলে ধরেন। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডক্টর মানিক সাহা এবং রাজ্যের অর্থমন্ত্রী প্রনজিৎ সিংহ রায়কে উদয়পুর রমেশ প্রাক্তনীর আজীবন সদস্যপদ প্রদান করা হয়। তাদেরকে উত্তরীয় পরিয়ে এবং মানপত্র দিয়ে সম্বর্ধিত করা হয়।

রাজ্যে

রাজ্যে এখনো ম্যালেরিয়া আয়ত্তের মধ্যে আসেনি!

রাজ্যে ম্যালেরিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা অনেক কমেছে। ২০২৩ সালের তুলনায় ২০২৪ সালে তথ্য ঘাটলে দেখা যাবে ম্যালেরিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা অনেক কমেছে। এর একমাত্র কারন হলো, ম্যালেরিয়া প্রবন এলাকায় নিয়মিত স্বাস্থ্য শিবির, আশা কর্মীদের নজরদারি বৃদ্ধি। বলা যায় মুখ্যমন্ত্রী ডাক্তার মানিক সাহার নির্দেশে এখন স্বাস্থ্য দপ্তরের আধিকারিক ও কর্মীরা প্রত্যন্ত এলাকায় গিয়ে রক্ত সংগ্রহ করার পাশাপাশি স্বাস্থ্য পরিসেবা পৌঁছে দেওয়ার কাজটি করছে৷ গত বছর তথা ২০২৪ সালে জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত রাজ্যে ম্যালেরিয়া আক্রান্ত রোগী সংখ্যা ৯ হাজার ৭৭০ জন।যা ২০২৩ সাল থেকে অনেক কম। স্টেট ম্যালেরিয়া বিভাগ থেকে প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে ২০২৩ সালে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ২২৪১২ জন। এছাড়া ২০২৪ সালে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত জেলা হচ্ছে ধলাই।ঐ জেলায় আক্রান্তের সংখ্যা ৬৮২০জন। গত বছর আক্রান্ত এলাকাগুলিতে ওষুধি মশারি বিতরণ করা হয়েছে ৯ লাখ পঁচিশ হাজার ১৮৫ টি। এছাড়া স্বাস্থ্য দপ্তর আক্রান্ত এলাকাগুলিতে প্রতিনিয়ত স্বাস্থ্য শিবির জারি রেখেছে। শুধু তাই নয় আক্রান্ত এলাকাগুলিতে বাড়ি বাড়ি গিয়ে স্বাস্থ্যকর্মীরা রোগীর রক্ত পরীক্ষা করছে। যার ফলে ম্যালেরিয়া চিহ্নিতকরণ এর কাজ খুব দ্রুত করা সম্ভব হচ্ছে। রাজ্যে গত বছর ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১১৯৮ জন।তার মানে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যাও কমেছে ও কোন মৃত্যুর ঘটনাও ঘটে নি।

গত বছরের জানুয়ারি মাস থেকে ২৮ জুন পর্যন্ত রাজ্যে ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়েছিলেন ৪০৩৪ জন। এই সময়ে ২০২৩ সালে সংখ্যাটা ছিল ৫৬০০জন। ২০২৭ সালের মধ্যে রাজ্যে ম্যালেরিয়া নির্মূল করার লক্ষ্য নিয়েছে ত্রিপুরা সরকার। তবে এটাও ঠিক, ম্যালেরিয়া প্রবন এলাকায় মাসে দুবার স্বাস্থ্য শিবির করার কথা থাকলেও কিছু কিছু জায়গায় একবারও স্বাস্থ্য শিবির করা হয় নি। এই সময়ে প্রত্যন্ত জনপদে জলবাহিত রোগের সাথে পাল্লা দিয়ে ম্যালেরিয়ার প্রাদুর্ভাব ঘটে। কিন্তু আগাম স্বাস্থ্য দফতর ব্যবস্থা নিলে কিংবা স্বাস্থ্যশিবির নিয়মিত ভাবে সংগঠিত করলে ম্যালেরিয়ার আক্রমণ থেকে জনজাতি অংশের মানুষ রেহাই পেতে পারেন। যদিও গত কয়েকবছর ধরে ম্যালেরিয়ায় কোনো মৃত্যু নেই। তবে আক্রান্তের ঘটনা ঘটছে। রাজ্যে সবচেয়ে বেশি ম্যালেরিয়া প্রবণ এলাকা হচ্ছে ধলাই জেলা। গত বছর এই জেলাতেও আক্রান্তের সংখ্যা অনেকটাই কমেছে বলে। এই জেলায় চলতি বছরের জানুয়ারি মাস থেকে ২৮ জুন পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৩১৪৬ জন। তবে এ বছর ম্যালেরিয়া প্রবণ এলাকাগুলিতে ঘন ঘন স্বাস্থ্য শিবির করার কাজটি আগে থেকেই নেওয়ার ফলে এই বছর ম্যালেরিয়ার আক্রান্তের সংখ্যা অনেকটাই কমানো সম্ভব হয়েছে বলে জানা গেছে। লংতরাইভ্যালি মহকুমার পূর্ব ও পশ্চিম মালিধর, থালছড়া, গর্জন পাশা, গোবিন্দবাড়ি, তুই পাবাড়ি সহ ধলাই জেলার গঙ্গানগর, গণ্ডাছড়া, আমবাসা, করবুক, শিলাছড়ি, সাব্রুমের মাগরুম এলাকায় ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয় জনজাতি অংশের শিশু ও বৃদ্ধরা৷ রাজ্যে ২০১৪ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত ম্যালেরিয়ার প্রকোপে প্রচুর মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। কিন্তু এখন স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে উন্নত পরিষেবার ফলে ম্যালেরিয়ায় সংক্রমণের হার কমিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে।

তবে উদ্বেগ রয়েছে। ২০১৪ সালে ত্রিপুরায় ম্যালেরিয়া ভয়াবহ আকার ধারণ করেছিল। ওই বছর ৫১ হাজার ২৪০ জন ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। তাঁদের মধ্যে ৯৬ জনের মৃত্যু হয়েছিল। তেমনি ২০১৬ সালে ৩২ হাজার ৫২০ জন ওই রোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন। তাঁদের মধ্যে ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছিল। কিন্তু ২০২২ সালে সংক্রমণের সংখ্যা কমিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে। ওই বছর ১২ হাজার ৭৭১ জন ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। কিন্তু একজনও মারা যাননি। এবারো ম্যালেরিয়া ভয়াবহ আকার ধারন করে নি। রাজ্যে ম্যালেরিয়া প্রবণ এলাকাগুলিতে স্বাস্থ্য দপ্তর থেকে প্রতিনিয়ত মনিটরিং করা হয়। ওষুধ থেকে শুরু করে রক্ত পরীক্ষার কিট পর্যাপ্ত রয়েছে। দপ্তর সবচেয়ে বেশি জোর দিয়েছে রক্ত পরীক্ষার উপর। তাতে আক্রান্তের সংখ্যা বেশি হলেও সঠিক চিকিৎসার সুযোগ পাচ্ছেন রোগীরা এবং দ্রুত সুস্থ হচ্ছেন। ম্যালেরিয়া থেকে রক্ষা পেতে সচেতনতামূলক উদ্যোগের পাশাপাশি ঔষধ যুক্ত মশারি বিতরণ ও ম্যালেরিয়া প্রবণ এলাকায় বাড়ি বাড়ি গিয়ে রক্ত পরীক্ষা করা, ধরা পড়লে ওষুধ দেওয়া, গুরুতর আক্রান্তদের হাসপাতালে নিয়ে আসা, ও ম্যালেরিয়া প্রবণ এলাকাগুলিতে ঘন ঘন স্বাস্থ্য শিবির করা, এই কাজটি আগে থেকেই নেওয়ার ফলে গত বছর ম্যালেরিয়ার আক্রান্তের সংখ্যা অনেকটাই কমানো সম্ভব হয়েছে। তবে এটাও ঠিক যে প্রত্যন্ত এলাকায় দফতরের তেমন নজরদারি নেই। পর্যাপ্ত ওষুধ সরবরাহ না করার কারণে জনজাতি অংশের মানুষ সমস্যায় পড়েছেন। নেই স্বাস্থ্য শিবির। যাদের একটু সামর্থ্য রয়েছে তারা হাসপাতাল কিংবা প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ছুটে এলেও বাকিরা ওঝাদের উপর নির্ভরশীল। ঘরেই কাতড়াতে হয় শিশু থেকে বৃদ্ধ। লংতরাইভ্যালি মহকুমার সীমান্ত এলাকার জনপদগুলোতে বসবাসকারী সাধারণ মানুষের আর্থিক অবস্থা তেমন ভালো নয়। ফলে তারা চিকিৎসা পরিষেবা নিতে পারছেন না।সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর জওয়ানরা কিছু কিছু জায়গায় সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিলেও বাকিদের সমস্যা বাড়ছে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ মানিক সাহা স্বাস্থ্য পরিষেবাকে বিকেন্দ্রীকরণ করতে চাইছেন। তৃণমূল স্তরের মানুষ যাতে স্বাস্থ্য পরিষেবা পেতে পারেন তারজন্যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর সুফল পাচ্ছেন প্রত্যন্ত এলাকার মানুষ।

পর্যটক

পর্যটকদের আকর্ষণের জন্য সম্পূর্ণ প্রয়াস জারি আছে।

পর্যটকদের স্বার্থে কাজ করে যাচ্ছে পর্যটনমন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী। বুধবার উজ্জয়ন্ত প্রাসাদ পরিসরে এক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে পর্যটকদের জন্য ১৬ আসনের ২ টি বাস ও ১০ টি প্যাডেল বোটের সূচনা করেছেন। এই প্যাডেল বোট গুলো রাজবাড়ী দীঘিতে চলবে। মন্ত্রী শ্রী চৌধুরী জানান, আগামী দুই বছরের মধ্যে রাজ্যের পর্যটনকে একটি বিশেষ উচ্চতায় নিয়ে যাওয়া হবে। সেই লক্ষ্য নিয়ে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার কাজ করছে। তিনি জানান, রাজ্য ও বহিরাজ্যের পর্যটকদের জন্য দুটি বাস কেনা হয়েছে। এই বাস দিয়ে রাজ্যের দর্শনীয় স্থানগুলি পরিদর্শন করানো হবে। তিনি আরও জানান, নীরমহল, নারিকেল কুঞ্জ, ছবিমুড়া সহ রাজ্যের যে জলাশয়গুলিতে পর্যটকদের আকৃষ্ট করে সেখানে প্যাডেল বোট দেওয়া হবে। আগামী ১৫ জানুয়ারির মধ্যে ৫০ টি প্যাডেল বোট দেওয়া হবে। বাকি আরও ৫০ টি বোট আনা হচ্ছে। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পর্যটন দপ্তরের আধিকারিক সহ অন্যরা।