ত্রিপুরার সার্বিক বিকাশে ব্যতিক্রমী বাজেট অর্থমন্ত্রী প্রণজিৎ সিংহ রায়ের !!
২০২৫-২৬ অর্থবর্ষের জন্য পেশ করা বাজেটকে সর্বাঙ্গীণ ও সামগ্রিক উন্নয়নের লক্ষ্যে গৃহীত একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ বলে অভিহিত করলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা। শুক্রবার রাজ্য বিধানসভায় অর্থমন্ত্রী প্রণজিত সিংহ রায় রাজ্যের বাজেট পেশ করার পর মুখ্যমন্ত্রী এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেন, এই বাজেট রাজ্যের সার্বিক উন্নয়ন ও প্রগতির পথ সুগম করবে বলে তিনি আশাবাদী।
মুখ্যমন্ত্রী জানান, এই বাজেট প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ‘সবকা সাথ, সবকা বিকাশ এবং সবকা বিশ্বাস’ নীতির প্রতিফলন ঘটিয়েছে। এটি রাজ্যের জনগণের সার্বিক কল্যাণ ও উন্নয়নের কথা মাথায় রেখে পরিকল্পিতভাবে তৈরি করা হয়েছে।এবারের বাজেটের মোট পরিমাণ ৩২,০০০ কোটি টাকারও বেশি বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, এই বাজেটের আকার গত বছরের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে, তবে ঘাটতির পরিমাণ প্রায় ৪২৯ কোটি টাকা থাকলেও তা সামাল দিতে সক্ষম হবে সরকার, বলে জানিয়েছেন তিনি।
এবারের বাজেটে একাধিক জনকল্যাণমূলক ও উন্নয়ন প্রকল্পের ঘোষণা করা হয়েছে, যা রাজ্যের বিভিন্ন শ্রেণির মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নত করতে সাহায্য করবে। উল্লেখযোগ্য কয়েকটি নতুন প্রকল্প হলোঃ
- ভারত মাতা ক্যান্টিন: রাজ্যের গরিব ও নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য সাশ্রয়ী মূল্যে খাবারের ব্যবস্থা।
- প্রতিবন্ধীদের জন্য এন্টারটেইনমেন্ট সেন্টার: বিশেষভাবে সক্ষম ব্যক্তিদের বিনোদন ও মানসিক বিকাশের জন্য আধুনিক সুযোগ-সুবিধাসম্পন্ন কেন্দ্র।
- মুখ্যমন্ত্রী কন্যা বিবাহ যোজনা: দরিদ্র পরিবারের কন্যাদের বিয়ের জন্য আর্থিক সহায়তা প্রদান।
- মুখ্যমন্ত্রী বালিকা সমৃদ্ধি যোজনা: কন্যাশিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত করতে বিশেষ অনুদান প্রকল্প।
- কম্পিউটার-ভিত্তিক পরীক্ষা কেন্দ্র: শিক্ষার্থীদের আধুনিক ও ডিজিটাল পদ্ধতিতে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার সুবিধা প্রদান।
- ত্রিপুরা প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা কেন্দ্র: চাকরিপ্রার্থীদের জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণ ও সহায়তা কেন্দ্র।
এদিন একই সাথে সরকারি কর্মচারী ও পেনশনারদের জন্য ৩ শতাংশ ডি.এ. ও ডি.আর. বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যদিও মন্ত্রী বিধায়কদের বেতন ভাতা বৃদ্ধির পর সরকারি কর্মচারী ও পেনশনারা অনেক বেশি কিছু আশা করেছিল। উল্লেখ্য এই তিন শতাংশ মহার্ঘ ভাতা বৃদ্ধির পরও সরকারি কর্মচারীদের আরো ২০ শতাংশ মহার্ঘ্যতা বাকি রয়ে গেল।
যেখানে রাজ্য সরকার আশা প্রকাশ করছে, এই বাজেটের বাস্তবায়নের মাধ্যমে ত্রিপুরার শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও আর্থ-সামাজিক পরিকাঠামো আরও সমৃদ্ধ হয়ে উঠবে। সেই মুহূর্তে সাধারণ মানুষের একাংশের মতে, এই আয়-ব্যয়ের হিসাবে কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক উপেক্ষিত হয়েছে। বিশেষ করে বেকার যুবকদের জন্য স্থায়ী কর্মসংস্থানের কোনো সুস্পষ্ট রূপরেখা নেই। এছাড়া নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখার বিষয়ে তেমন কোনও কার্যকরী পদক্ষেপের নেওয়া হয়নি, যা মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত পরিবারের জন্য উদ্বেগের বিষয়। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ঘোষিত প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়ন কতটা কার্যকর হবে, তা সময়ই বলে দেবে, কারণ আগেও অনেক প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল এবং তার সিংহভাগেরই সঠিক বাস্তবায়ন হয়নি। তার মধ্যে উল্লেখ্য ২০১৮ বিধানসভা নির্বাচনে পরিবর্তনের মুখ্য বিষয় কর্মচারীদের সপ্তম বেতন কমিশন।