TTADC

বাস পরিষেবার নামে বাণিজ্যে নেমেছে এডিসি প্রশাসন ? এতটাই কঠোর শর্ত আরোপ করা হয়েছে যে এখন পর্যন্ত দরপত্র জমা দিতে আগ্রহ দেখাচ্ছে না কোন সংস্থা বা অপারেটর। এমনিতেই সারা রাজ্যে এখন বাসের যাত্রী সংখ্যা একেবারে তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। বাস চালিয়ে লাভের মুখ দেখতে মালিকদের হিমসিম খেতে হচ্ছে। একাংশ বাস মালিকরাই বলছেন বাণিজ্য একেবারেই নেই। তার ওপর এডিসি প্রশাসনের খাই মেটাতে গিয়ে ব্যবসা একেবারে লাটে উঠবে বলেই মনে করছেন বিভিন্ন সংস্থার মালিকপক্ষ। শর্তাবলী দেখলে যে কারোর চোখ কপালে উঠবেই। বাস মালিকরা বলছেন এডিসির শর্ত মেনে বাস চালালে লোকসান হবে। উল্টো পকেট থেকে স্টাফ এর বেতন চালাতে হবে। সম্প্রতি তিনটি টাটা এসি বাস পরিসেবা চালু করার ঘোষণা দিয়েছিল এডিসি প্রশাসন। তিপরা মথার সুপ্রিমো প্রদ্যুত কিশোর বাস চালিয়ে পরিষেবার সূচনা করেছিলেন। এডিসির বিভিন্ন রুটে বাসগুলো চলবে। জনজাতিরা এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় যেতে পারবেন এসি বাসে চড়ে। অনেকে খুশি হয়েছিল। আবার এডিসি প্রশাসন মুখে তিপরাসাদের জন্য এই পরিষেবা চালু করার কথা বললেও তিনটি এসি বাসকে স্টাফকার হিসেবে ব্যবহার করতে চায় প্রশাসন। দরপত্র আহ্বান করা হয়েছিল। কিন্তু কিন্তু উৎসাহ নেই বাস মালিকদের। এডিসি প্রশাসন ইচ্ছে করলেই বাস নিজেরা পরিচালনা করতে পারে । অর্থাৎ এডিসির উদ্যোগেই বাস পরিষেবা জারি রাখা যেতে পারে। কিন্তু দেখা গেছে এডিসি প্রশাসন দায়িত্ব নিজের হাতে না রেখে বিভিন্ন অপারেটরদের হাতে বাস পরিসেবার দায়িত্ব তুলে দিতে চাইছে। দরপত্র আহবান করা হয়েছে এবং বেশ কিছু শর্ত আরোপ করা হয়েছে। শর্ত দেখেই আক্কেলগুড়ুম হওয়ার অবস্থা।

কি সেই শর্ত? এক একটি বাসের দৈনিক ভাড়া নির্ধারণ হয়েছে আড়াই হাজার টাকা। বরাত পাওয়া সংস্থাকে প্রতি মাসের দশ তারিখের মধ্যে এই টাকা এডিসি প্রশাসনে জমা দিতে হবে। এর আগে পাঁচ লক্ষ টাকা করে বরাত প্রাপ্ত সংস্থাকে সিকিউরিটি মানি হিসেবে জমা করতে হবে। যে ব্যক্তি বা সংস্থা বাস পরিষেবার দায়িত্ব পাবে তার সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ হবে এক বছর। এক বছর পর চুক্তি রিনিউ করা হবে। ওই ব্যক্তি বা সংস্থার কাজে এডিসি প্রশাসন সন্তুষ্ট হলে চুক্তির মেয়াদ বাড়াতেও পারে। তিনটি বাস কোন্ কোন্ রুটে চলবে তাও ঠিক করে দিয়েছে এডিসি প্রশাসন। তিনটি বাসে এডিসি প্রশাসনে যারা কর্মচারী রয়েছেন তাদেরকে খুমুলুঙে নিয়ে যাওয়ার জন্যই ব্যবহার করা হবে। শহরের তিনটি জায়গা নন্দননগরের ডনবসকু স্কুল এডিনগর ড্রপ গেট এবং প্রগতি রোডে সকাল ন’টার মধ্যে বাস দাঁড় করাতে হবে। সকাল দশটার মধ্যে কর্মচারীদের খুমলুঙে পৌঁছে দিতে হবে।

আবার বিকাল পাঁচটার সময় খুমুলুঙ থেকে বাসগুলো কর্মচারীদের নিয়ে আগরতলার উদ্দেশ্যে রওনা হবে। কর্মচারীরা যেখানে নামতে চাইবেন সেখানেই তাদের নামাতে হবে। এডিসি প্রশাসনের দেওয়া শর্ত মেনে যদি বাস চালাতে আগ্রহী হয় কোন সংস্থা তাহলে তো প্রতিমাসে ৭৫ হাজার টাকা করে বাস ভাড়া এডিসি প্রশাসনে জমা দিতে হবে। তার উপর রয়েছে চালক ও সহ চালকের বেতন। গাড়ির চালকের বেতন নুন্যতম ১৫ হাজার টাকা। সহচালককে অন্তত ১০ হাজার টাকা তো দিতে হবে। তার ওপর রয়েছে চালক, সহচালকদের খাওয়া খরচ। যেহেতু সিএনজি চালিত বাস তাই প্রতিদিন অন্তত ৬০০ থেকে ৭০০ টাকার জ্বালানি তো ভর্তে হবে। তারপর বাসে কোন সমস্যা হলে মেরামতি মেরামত করতে হবে। সব মিলিয়ে বরাত প্রাপ্ত সংস্থার প্রতি মাসে ১ লক্ষ ২৫ হাজার টাকার উপর খরচ রয়েছে। তার উপর এডিসিতে জমা আছে পাঁচ লক্ষ টাকা সিকিউরিটিমানি। স্বাভাবিকভাবেই যারাই দরপত্র জমা দিয়েছেন বা জমা দেবেন বলে স্থির করেছেন তারা এই ব্যবসা করবেন কিনা চিন্তায় আছেন। এখন পর্যন্ত কেউ এগিয়ে আসে নি বলে খবর।

এক বাস মালিক জানিয়েছেন বাসে কোন সমস্যা হলে তা সাড়াই করতে গিয়ে অন্তত ত্রিশ হাজার টাকা খরচ পড়বে। নতুন বাস অন্তত পাঁচ – ছয় মাস সারাইয়ের কোন খরচ নাও লাগতে পারে। কিন্তু এরপর বাসে সমস্যা হলে সারাই তো করতে হবে। ৫০ আসনের বাসে চড়বেন এডিসির কর্মচারীরা। তাদের বেতন থেকেই ভাড়া কেটে নেওয়া হবে। সেক্ষেত্রে প্রতি মাসে ২০০০ টাকা করে ভাড়া ধরলে প্রতিমাসে পঞ্চাশ আসনের বাস থেকে আসবে এক লক্ষ টাকা। আবার ৫০ আসন ভরবে কিনা সেটাও তো প্রশ্ন। এক লক্ষ টাকার প্রতি মাসে বাস থেকে আদায় হলে তারপরেও ২৫ হাজার টাকা ক্ষতিতে চালাতে হবে। আবার বাসে পুরো যাত্রী হলে ধরে নেওয়া যাক্ প্রতি মাসে রোজগার এক লক্ষ কুড়ি হাজার টাকা। তার পরেও তো লোকসানে। তবে এডিসি প্রশাসন থেকে বলা হয়েছে কর্মচারীদের খুমলুঙে নামিয়ে দিয়ে বিকাল পাঁচটা পর্যন্ত যে মধ্যেকার সময় থাকবে সেই সময়ে বসগুলো অন্যরুটে চালানোর ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে। সেই রুটগুলিও ঠিক করে দেবে এডিসি প্রশাসন। তারপরেও কিন্তু আশার আলো দেখছেন না বাস মালিকরা। মাঝখানে চার থেকে সাড়ে চার ঘন্টা সময়ে কতটুকুই বা রোজগার হবে। ফলে এইসব কঠিন শর্ত আরোপ করার কারণে এডিসি প্রশাসন বাস অপারেটর পাচ্ছে না।বাস চালাতে আগ্রহী হচ্ছে না কোন ব্যক্তি বা সংস্থা।

লোকসানে কেইবা বাস চালাবে। বাস দুর্ঘটনাগ্রস্ত হলে বা কোন ক্ষতি হলে সে খরচ বহন করতে হবে অপারেটরদের। আর এডিসির কর্মচারীদের কাছ থেকে প্রতি মাসে ২০০০ টাকা করে পাওয়া যাবে কিনা তাতেও সন্দেহ রয়েছে। বাস মালিকদের বক্তব্য মাসিক ৭৫ হাজার টাকা ভাড়ায় বাস চালানো অসম্ভব। এক সময় বাম আমলে জওহরলাল নেহেরু আরবান কোম্পানি লিমিটেড শহরে বাস পরিষেবা চালু করেছিল। কিছুদিন চলার পর বাস পরিষেবার গঙ্গাপ্রাপ্তি ঘটে। শতাধিক বাস পরিষেবা চালু হয়েছিল। কিন্তু পরিচালনগত ত্রুটির কারণে সেটা স্থায়ী হয়নি। এখন একই অবস্থায় এডিসি প্রশাসনে৷ সব মিলিয়ে বাস পরিসেবা চালু হবে কিনা, আবার চালু হলে কতদিন স্থায়ী হয় সেটাই দেখার৷

passport

বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতির কারনে উদ্বেগ জনক ভাবে বাড়ছে অনুপ্রবেশ। আর একইসাথে দ্বৈত নাগরিকত্বের সুযোগ নিয়ে বাংলাদেশীরা, সরকারি সুফল ভোগ করছে ভারতে। শুক্রবারেও ১০ জন বাংলাদেশী নাগরিককে আমবাসা রেলস্টেশন থেকে আটক করা হয়েছে। ক্রমাগত অত্যাচার হামলা হুজ্জুতির জেরে অনেকেই নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে সীমান্ত ডিঙিয়ে অবৈধভাবে এপারে প্রবেশ করছেন। এখন পর্যন্ত বহু সংখ্যক অনুপ্রবেশকারীকে আটক করা হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে প্রতিবেশী দেশের হিন্দুরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। এই পরিস্থিতিতে রাজ্যে ভিসা আবেদন বন্ধ রয়েছে। এর ফলে রাজ্যে সীমান্ত ডিঙিয়ে অবৈধভাবে প্রবেশ অব্যাহত রয়েছে। অবশ্য বাংলাদেশ থেকে সীমান্ত টপকে রাজ্যে এসে কিছু টাকা পয়সা খরচ করতে পারলেই ভারতীয় নাগরিকত্ব বাগিয়ে নেওয়া মোটেই কষ্টকর নয়। তার জন্য তৈরিও রয়েছে দালালরা। টাকা ছাড়লেই হয়ে গেল। আর দ্বৈত নাগরিকত্বের সুযোগ নিয়ে এরাজ্যে অনেক বাংলাদেশী ব্যাবসা পেতে বসেছে। খুলেছে পেট্রোল পাম্প, গ্যাস কাউন্টার,রেশন শপ আরো কত কি। তবে এই সংস্কৃতি এ রাজ্যে নতুন নয়। বাম আমলে অনেক সিকি আধুলি নেতা শুধু বাংলাদেশীদের ভারতীয় বানিয়ে প্রচুর অর্থ উপার্জন করেছেন। সরকারি সুবিধা দিয়ে বামেদের ভোট ব্যাঙ্ক স্ফীত করেছেন তারা। চুনোপুঁটি নেতাদের কারনে অনেক বাংলাদেশী রাতারাতি শহর ও আশপাশ এলাকায় বহুমুল্য জমি ক্রয় করে দিব্যি আছে। শুধু সোনামুড়া, বক্সনগর এমনকি কৈলাসহরে এরকম দ্বৈত নাগরিকের সংখ্যা নেহাত কম নয়। দ্বৈত নাগরিকরা দেশের আভ্যন্তরীন নিরাপত্তার ক্ষেত্রে হুমকিস্বরূপ। দু -দেশের নাগরিক হয়ে,কিভাবে গ‍্যাস এজেন্সির লাইসেন্স পেল? তা নিয়ে শুধু বক্মনগর ই নয় সারা রাজ্য জুড়েই সাধারণ মানুষের প্রশ্ন।

সোনামুড়া খাদ্য দপ্তরের অধিনে,বক্সনগর আর ডি ব্লকের অন্তর্গত কলসীমুড়ার জনৈক বাংলাদেশী দ্বৈত নাগরিকত্বের সুযোগ নিয়ে খুলে বসেছেন গ্যাস কাউন্টার। ২০১২ সালে বাম জামানায় গ‍্যাস এজেন্সি বক্সনগরে খোলার কথা থাকলেও রাজনৈতিক প্রভাব ঘাটিয়ে কলসীমুড়াতে নিয়ে যায় কাউন্টার।।বাংলাদেশের ভোটার তালিকায় তার নাম ও পরিবারের অন‍্যান‍্য ভাই এবং বোনদের নাম নথিভুক্ত আছে। কুমিল্লা জেলার বুড়ি চং থানার অধিনে রাজাপুর ইউনিয়নভুক্ত শংকুচাইল এলাকার ভোটার তিনি। বাংলাদেশে যার ভোটার পরিচয় পত্রের নম্বর ০০৩৯ এবং তার ভাইয়ের ভোটার পরিচয় পত্রের নম্বর ০০৪০। বতর্মানে বাংলাদেশে প্রচুর স্থাবর, অস্থাবর সম্পত্তি এবং ঢাকা শহরের টঙ্গী ও খিল ক্ষেত এলাকায় দুটি বিশালবহুল প্রাসাদোপম বাড়ি রয়েছে তার। বাম আমলে নেতাদের হাত ধরে এরকম অনেক বাংলাদেশী ভারতীয় নাগরিকত্ব হাতিয়ে নিয়েছে। এটা একটা উদাহরণ মাত্র। সোনামুড়ায় দুটি রেশন শপের মালিক দ্বৈত নাগরিকত্ব হাতিয়ে নেওয়া এক বাংলাদেশী। তেমনি উনকোটি জেলার চন্ডিপুর ব্লকের অধীন এক বাংলাদেশী দ্বৈত নাগরিকত্বের সুযোগ নিয়ে পেট্রোল পাম্প খুলে বসেছেন।কমলাসাগর সীমান্ত এলাকায় এরকম বেশ কয়েকজন বাংলাদেশী দ্বৈত নাগরিকত্বের সুযোগ নিয়ে সরকারি প্রকল্পের সুফল ভোগ করছেন। কেউ বা মুদি দোকানের আড়ালে পাচারবানিজ্যের সাথে যুক্ত। এরকম দ্বৈত নাগরিকরা বিপদজনক। কোন অঘটন ঘটিয়ে বা নাশকতার বীজ বপন করে পালিয়ে যায় বাংলাদেশে।সে দেশের নাগরিকত্ব থাকার কারনে কোন অসুবিধা নেই তাদের। আবার বাংলাদেশে কোন কুকর্ম করে এপাড়ে এসে দিব্যি আছে তারা। একদিকে দ্বৈত নাগরিকত্বের বিপদ অন্যদিকে রাজ্যের সীমান্ত এলাকা দিয়ে বাড়ছে অনুপ্রবেশ। সীমান্ত এলাকায় সন্দেহজনক লোকের আনাগোনা বেড়েছে। সেই সাথে সীমান্তের ঢিলে ঢালা নিরাপত্তার সুযোগ নিয়ে রোহিঙ্গারাও বিভিন্ন কায়দায় এপাড়ে আসছে।সীমান্ত দিয়ে মানব পাচার বেড়ে যাওয়ার উদ্বিগ্ন প্রশাসন, সীমান্ত রক্ষি বাহিনীর কর্তারা কয়েকদিন পর পর বৈঠকে বসে। কিন্তু মানব পাচার বন্ধ হয়নি। বরং বেড়েছে। সীমান্তে মাথাচাড়া দিয়েছে দালালচক্র।তাদের প্রনামী দিলেই শুধু অনুপ্রবেশই নয় বাইক দিয়ে অনুপ্রবেশকারীদের পৌঁছে দেবে নির্দিষ্ট গন্তব্যে।
এভাবে সীমান্তের ঢিলে ঢালা নিরাপত্তা ও উন্মুক্ত সীমান্ত দিয়ে উদ্বেগজনক ভাবে বাড়ছে অনুপ্রবেশ।

carousel 1

রাজ্যের প্রধান রেফারেল সরকারি মেডিকেল কলেজ জিবিপি হাসপাতাল হলো রাজ্যের মধ্যে রোগীর উন্নত চিকিৎসার একমাত্র ভরসার স্থল। আগরতলা সহ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে রোগীরা চিকিৎসা করাতে আসেন। বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে গুরুতর অসুস্থ রোগীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রেফার করে জিবিপিতে পাঠানো হয়। রাজ্য সরকারও সেই কারণে উন্নত চিকিৎসা পরিকাঠামো তৈরি করার উপর জোর দিয়েছে। বর্তমান বিজেপি জোট সরকার রোগীর উন্নত চিকিৎসা পরিষেবায় সুপার স্পেশালিটি পরিকাঠামোও তৈরি করেছে। কিন্তু রাজ্য সরকার রোগীর চিকিৎসা পরিষেবায় উন্নত চিকিৎসা পরিকাঠামো গড়লেও হাসপাতালের একাংশ সিনিয়র চিকিৎসক রোগীর চিকিৎসা পরিষেবায় হাসপাতালের জন্য যথাযথ সময় না দেওয়ায় রোগীরা সমস্যায় পড়ছেন। বিশেষ করে বিশেষজ্ঞ তথা স্পেশালিস্ট চিকিৎসকদের একটি ছোট অংশ হাসপাতালে উপস্থিত থেকে রোগীর চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়ার প্রতিদিনের যে রুটিন রয়েছে সেই রুটিন অমান্য করছেন বলে অভিযোগ।

হাসপাতালে যে রুটিন রয়েছে তা হলো প্রতিদিন (ছুটির দিন ছাড়া) সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৪টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত চিকিৎসকরা বহির্বিভাগে (OPD) বসে রোগী দেখবেন। তার ফাঁকে সময় করে অন্ত:বিভাগে (ইনডোর) গিয়ে রোগী দেখবেন। বিকাল ৪টা ৩০ মিনিটে বহির্বিভাগ বন্ধ হয়ে গেলে তারপর বিকাল ৪টা ৩০ মিনিট থেকেই রাত ১০টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত প্রতিটি বিভাগে অন্ত: বিভাগে অর্থাৎ ইনডোরে ভর্তি চিকিৎসাধীন রোগী ও নতুন ভর্তি হওয়া রোগী দেখার জন্য একজন করে স্পেশালিস্ট চিকিৎসক থাকবেন। রাত ১০টা ৩০ মিনিটের পর স্পেশালিস্ট চিকিৎসক প্রতিটি বিভাগের জন্য একজন করে বাড়িতে অনকলে থাকবেন। রাত ১০টা ৩০ মিনিট থেকে বহির্বিভাগ খোলা পর্যন্ত সকাল ৯টা অবধি অনকলে চিকিৎসক থাকবেন। গুরুতর অসুস্থ রোগীকে হাসপাতালে এসে চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়ার জন্য হাসপাতাল থেকে অনকলে চিকিৎসককে ডেকে আনা হবে। রবিবার বা সরকারি ছুটির দিন হাসপাতালের বহির্বিভাগ বন্ধ থাকায় প্রতিটি বিভাগে রুটিন ও রোস্টার অনুযায়ী অন্ত: বিভাগে তথা ইনডোরে ভর্তি চিকিৎসাধীন রোগী দেখার জন্য একজন স্পেশালিস্ট চিকিৎসক হাসপাতালে উপস্থিত থাকবেন বা রোগী দেখে যাবেন। রোগীর চিকিৎসা পরিষেবায় হাসপাতালের এই রুটিন আগের রুটিন পরিবর্তন করে চালু হয়েছিল বিজেপি জোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর।

২০১৮ সালের শেষদিকে রুটিন চালু হলেও এই রুটিন স্পেশালিস্ট চিকিৎসকদের ছোট একটি অংশ ঠিকমতো না মানায় হাসপাতালে ভর্তি গুরুতর অসুস্থ রোগীদের চিকিৎসা পরিষেবার কাজ বিঘ্নিত হচ্ছে বলে অভিযোগ। কেন স্পেশালিস্ট চিকিৎসকদের ছোট অংশ রুটিন যথাযথভাবে মানছেন না সে বিষয়ে হাসপাতালের এক আধিকারিকের বক্তব্য, হাসপাতালের রোগী দেখার রুটিন ও রোস্টার যথাযথভাবে মেনে চলার জন্য বারবার সার্কুলার দেওয়া হচ্ছে। তারপরও পরিবর্তন নেই বলে তিনি জানান। হাসপাতালে চিকিৎসকদের মধ্যে যারা মেডিকেল কলেজের ফ্যাকাল্টি তাদের পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণ করার দায়িত্ব কলেজ প্রিন্সিপালের। কলেজ ফ্যাকাল্টি নয়, এমন চিকিৎসকদের পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণ করার দায়িত্ব হাসপাতাল মেডিকেল সুপারের। অভিযোগ, ছোট অংশের স্পেশালিস্ট চিকিৎসকদের রুটিন ও রোস্টার যথাযথভাবে না মানায় সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়তে হচ্ছে মেডিসিন, গাইনো ও প্রসূতি, সার্জিক্যাল, ট্রমা এসব বিভাগকে। সেক্ষেত্রে হাসপাতালের প্রায় সব বিভাগেই সবসময় উপস্থিত থেকে রোগীর চিকিৎসা পরিষেবার প্রধান ভরসা হয়ে দাঁড়িয়েছে পোস্ট গ্র্যাজুয়েট তথা পিজি চিকিৎসক ও শিক্ষানবিশ ইন্টার্নরাই। যেহেতু রাজ্যের প্রধান রেফারেল হাসপাতাল জিবিপি তাই এখানে সারা রাজ্য থেকে বহু গুরুতর সঙ্কটাপন্ন অসুস্থ রোগী উন্নত চিকিৎসা পরিষেবা নিতে আসছেন। সেইজন্য সবসময় স্পেশালিস্ট চিকিৎসকের চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়া খুব গুরুত্বপূর্ণ বলে হাসপাতালের নিষ্ঠাবান চিকিৎসকদের অভিমত। জিবি হাসপাতালে চিকিৎসকের খুব ছোট অংশ বাদে সিংহভাগ চিকিৎসকই হাসপাতালে এসে রোগীর চিকিৎসা পরিষেবা সঠিকভাবে প্রদানে উৎসাহ উদ্দীপনা নিয়ে দিনরাত্রি কাজ করে চলেছেন। রোগীর চিকিৎসা পরিষেবার কাজে সেসব চিকিৎসকরা যথেষ্ট দায়িত্ব নিয়ে আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করছেন বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে।

999999

রাজ্যে চলছে শিল্প বান্ধব সরকার। এমনটাই বলছেন মুখ্যমন্ত্রী ডাক্তার মানিক সাহা সহ মন্ত্রিসভার সদস্য এবং শাসক দলের নেতৃত্বরা। কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকার চাইছে বেকার যুবকদের স্বাবলম্বী এবং আত্মনির্ভরশীল করে তুলতে। আর সেই লক্ষ্যে সরকারের মুখাপেক্ষী না থেকে শিল্প কলকারখানা স্থাপনে বেশি আগ্রহ দেখাচ্ছে সরকার। যাতে করে বেকারদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয় এবং শিল্প বান্ধব পরিবেশ তৈরি হয়। এর আগেও দেশের বিভিন্ন জায়গায় শিল্পপতিদের রাজ্যে এসে শিল্প কলকারখানা স্থাপনে আগ্রহ ও উৎসাহ তৈরি করতে নানা ধরনের কর্মসূচি হয়েছে। সম্প্রতি আগর ভিত্তিক কারখানা স্থাপনের লক্ষ্যে রাজধানীতে আগর চাষী শিল্পপতি নিয়ে এক সম্মেলন হয়। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী প্রায়শই বলেন, রাজ্যে অনেক বেসরকারি সংস্থা এগিয়ে আসছে শিল্প স্থাপনের লক্ষ্যে। হাসপাতাল থেকে শুরু করে বিভিন্ন শিল্প কারখানা স্থাপনে যেমন অনেক শিল্প সংস্থা আগ্রহ দেখাচ্ছে তেমনি রাজ্যেও বেশ কিছু উদ্যোগপতি এবং উৎসাহী যুবক এগিয়ে আসছেন ছোট ছোট শিল্প স্থাপনে। মুখ্যমন্ত্রী যখনই রাজ্যের বাইরে যান, বিভিন্ন কর্মসূচিতে যোগ দেন তখন সুযোগ পেলে শিল্পপতিদের সাথে কথা বলেন। রাজ্যের প্রাকৃতিক সম্পদকে ব্যবহার করে শিল্প স্থাপনে উৎসাহ যোগানোর চেষ্টা করেন। তিনি বৃহস্পতিবার মহারাষ্ট্রে নতুন মন্ত্রিসভার শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন। সেখানে অনেক তারকার সমাবেশ হয়। রাজনৈতিক তারকাদের পাশাপাশি চলচ্চিত্র তারকা এবং শিল্পপতিরা সেই শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। দেবেন্দ্র ফরেনবিশের নেতৃত্বে বিজেপি সরকারের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানের ফাঁকে মুখ্যমন্ত্রী দেশের প্রধান শিল্পপতি মুকেশ আম্বানির সঙ্গে কথা বলেছেন। রাজ্যে যে শিল্প বান্ধব পরিবেশ রয়েছে তা তিনি তুলে ধরেন। মুম্বাইতে রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান ও এমডি শ্রী মুকেশ আম্বানি এবং অনন্ত আম্বানির সাথে দেখা করেছেন তিনি।

ত্রিপুরায় বিভিন্ন সম্ভাব্য বিনিয়োগের সুযোগ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। তাদের ত্রিপুরায় শিল্প স্থাপনে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন, প্রচুর প্রাকৃতিক সম্পদ রয়েছে যা রাজ্য এবং জাতির আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী৷ মুকেশ আম্বানির সংস্থা এ রাজ্যে শিল্প স্থাপনে আগ্রহী হলে রাজ্যের আর্থ সামাজিক মানোন্নয়ন যেমন হবে তেমনি কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়বে।

রাজ্যে চলছে

নর্থ ইস্ট কাউন্সিলের বৈঠক ঘিরে জোর প্রস্তুতি চলছে রাজ্য প্রশাসনে। সেজে উঠছে হোটেলগুলো। এনইসি বৈঠকে আসছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ। এর আগে গত আগষ্ট মাসে বৈঠকের কথা ছিল৷ কিন্তু ভয়াবহ বন্যার কারনে বৈঠক স্থগিত হয়ে যায়। এবারের বৈঠকে আসছেন ৬ রাজ্যের রাজ্যপাল, মুখ্যমন্ত্রীরা৷ ত্রিপুরা সহ সাত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ও রাজ্যপালরা বৈঠকে অংশ নেবেন৷ আগামী ২১ ও ২২ ডিসেম্বর দুদিন হবে এনইসির বৈঠক। আগামী ১৯ ডিসেম্বর আসছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ। তিনি রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব ও মন্ত্রীসভার সদস্যদের সাথে বৈঠক করবেন বলে খবর।

বাংলাদেশের সাম্প্রতিক ঘটনাবলী, সীমান্ত নিরাপত্তা নিয়ে এবারের বৈঠকে আলোচনা হবে৷ উত্তর পূর্বাঞ্চলের পাঁচটি রাজ্যের সাথে বাংলাদেশের সীমান্ত রয়েছে। ফলে অনুপ্রবেশ উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলোতে একটা বড় সমস্যা। কিভাবে সমস্যা দুর করা যায়, বিশেষ করে সীমান্ত নিরাপত্তা নিয়ে আলোচনা হবে এনইসির বৈঠকে৷ বৈঠকের উদ্বোধন করবেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ। তিনি বৈঠকের ফাকে সাত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের নিয়ে পৃথকভাবে বৈঠক করবেন বলে খবর। বাংলাদেশের অস্থির পরিস্থিতিতে রাজ্যগুলোতে সীমান্ত নিরাপত্তা নিয়ে রাজ্যগুলোর কাছ থেকে রিপোর্ট চাইবেন তিনি।উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলোতে নেশার রমরমা, উন্নয়ন সব বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে। কেন্দ্রীয় প্রকল্পের বাস্তবায়ন কতটা, ডোনার মন্ত্রকের আর্থিক সহায়তায় যে সব প্রকল্পের কাজ হচ্ছে সেই সব প্রকল্পের কাজের অগ্রগতি নিয়ে বৈঠকে বিস্তৃত আলোচনা হবে। পাশাপাশি আগামীদিনে রাজ্যগুলোর কর্মপরিকল্পনা নিয়েও আলোচনা হবে বলে খবর ৷

তথ্য বলছে, ২০০৮ সালের ১৩ মে আগরতলার প্রজ্ঞা ভবনে এনইসির ৫৬ তম বৈঠক হয়। সে সময় রাজ্যে ছিল বাম সরকার। আর কেন্দ্রে ছিল কংগ্রেস পরিচালিত সরকার। আর এবার ডাবল ইন্জিনের সরকার। জানা গেছে ছয় রাজ্যে থেকে প্রায় শতাধিক প্রতিনিধি আসছেন ধরে নিয়ে শহরের বড় হোটেলগুলো সাজিয়ে তোলার প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, ডোনার মন্ত্রীর পাশাপাশি আরো একজন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর আসার কথা। জানা গেছে আগামী ১৮ ডিসেম্বর থেকে হোটেলগুলো রাজ্য সরকারের অধীনে চলে যাবে। রাজ্য সরকারের অতিথিশালা, জিঞ্জার হোটেল, পোলো টাওয়ার সহ বিলাসবহুল আরো একটি হোটেল ইতিমধ্যেই বুক করা হয়েছে বলে খবর। মুখ্যমন্ত্রী ডাক্তার মানিক সাহা মুম্বাই থেকে ফিরে এলে হবে প্রস্তুতি বৈঠক ৷

অতিথি দেব ভবঃ। উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলোর আমন্ত্রিত অতিথিদের উষ্ঞ অভর্থ্যনা জানাতে প্রস্তুত হচ্ছে রাজ্য৷ ত্রিপুরার ঐতিহ্যবাহী চিরায়ত সংস্কৃতির মধ্য দিয়ে অতিথিদের বরন করা হবে বলে খবর। জানা গেছে, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী রাজ্যে অবস্থান কালে বৈঠকের ফাঁকে রাজ্য বিজেপির নেতৃত্বদের সাথে সাংগঠনিক বৈঠক করবেন৷ বৈঠক করবেন তিপ্রামথার নেতাদের সাথে ও৷ এডিসির পক্ষ থেকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর কাছে দাবি সনদ তুলে দেওয়া হতে পারে বলে খবর। রাজ্য পুলিশের পদস্থ আধিকারিকদের পাশাপাশি কেন্দ্রীয় আধাসামরিক বাহিনীর আধিকারিকদের সাথেও পৃথকভাবে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর বৈঠক করার কথা রয়েছে। ২০০৮ সালের মতই এবারো এনইসি বৈঠক হওয়ার কথা প্রজ্ঞা ভবনে। জি২০ শীর্ষ সম্মেলনের পর ফের রাজ্যে এতবর বৈঠকের আয়োজন হচ্ছে। দুটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকই হচ্ছে মুখ্যমন্ত্রী ডাক্তার মানিক সাহার শাসনকালে। জি২০ শীর্ষ সম্মেলনে বিদেশ থেকে রাজ্যে প্রতিনিধি হিসেবে যারা এসেছিলেন তারা রাজ্যের আয়োজনে আপ্লুত৷ বিদেশ থেকে প্রযুক্তিবিদ, বিজ্ঞানীদের পাশাপাশি এসেছিলেন কুটনৈতিকরা। তারা রাজ্যের আতিথেয়তায় মুগ্ধ হন। নীতি আয়োগের বৈঠকেও জি-২০ বৈঠকে রাজ্যের আতিথেয়তার প্রসঙ্গ তুলেছিলেন অন্য রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা। অবশ্যই রাজ্যের কাছে বড় প্রাপ্তি। সারা বিশ্বের কাছে রাজ্যকে মেলে ধরার সুযোগ হয়েছিল। ডাক্তার মানিক সাহার নেতৃত্বাধীন সরকার সেই কাজটা সুচারু রুপে সম্পন্ন করতে পেরেছে। এবার এনইসি বৈঠক আয়োজনের দায়িত্ব পরেছে রাজ্যের উপর। ফলে প্রস্তুতিতে কোন খামতি রাখতে চাইছে না রাজ্য৷

tripura bhavan
tripura bhavan 1

মহারাষ্ট্রের রাজধানী মুম্বাই সফরকালে বৃহস্পতিবার নতুন ত্রিপুরা ভবন নির্মাণের জন্য নবি মুম্বাইয়ের খরঘর সেক্টর-১৬ এলাকায় প্রস্তাবিত জমি পরিদর্শন করলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা। মহারাষ্ট্রের নবনির্বাচিত মুখ্যমন্ত্রীর শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গতকাল মুম্বাই গিয়েছিলেন ডাঃ সাহা। এরপর আজ প্রস্তাবিত জায়গা ঘুরে দেখেন তিনি। এর পাশাপাশি ত্রিপুরা ভবন নির্মাণ কাজের অগ্রগতি পর্যালোচনা করেন।

এবিষয়ে সংবাদ মাধ্যমকে মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ সাহা জানান, মুম্বাইয়ে প্রায়সময়ে ত্রিপুরা থেকে চিকিৎসার জন্য এবং অন্যান্য কাজে লোকজন আসেন। তাই অনেকদিন ধরে মুম্বাইয়ে একটি ত্রিপুরা ভবন স্থাপনের পরিকল্পনা করছে বর্তমান রাজ্য সরকার। মূলত, রোগী সহ অন্যান্য কাজে আসা মানুষের কথা মাথায় রেখে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, মুম্বাইয়ে আমাদের কোনো ত্রিপুরা ভবন নেই। সেজন্য এখানে একটি ত্রিপুরা ভবন স্থাপন করার উদ্দেশ্যে জমি অধিগ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এরমধ্যে মহারাষ্ট্রের নবনির্বাচিত মুখ্যমন্ত্রীর শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে আমি মুম্বাইয়ে এসেছি এবং এই সুযোগে ত্রিপুরা ভবনের প্রস্তাবিত জমি পরিদর্শন করতে এসেছি। এই জায়গাটি টাটা ক্যান্সার হাসপাতালের খুব কাছে রয়েছে এবং দুটি রাস্তা ব্যবহার করে যাওয়া যায়। এছাড়া সিকিম এবং অন্যান্য রাজ্যগুলিও এই এলাকায় ভবন স্থাপন করার উদ্যোগ নিয়েছে। আমি প্রস্তাবিত ভবনের কাঠামো ও নকশা খতিয়ে দেখেছি। এতে কিছুটা পরিবর্তন হয়তো করা হবে। আর এই প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য ১০০ কোটি টাকা মঞ্জুর করা হয়েছে। ইতিমধ্যে জমিও অধিগ্রহণ করা হয়েছে।

মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ সাহা আরো বলেন, আগামী দিনগুলিতে ত্রিপুরা ভবন স্থাপিত হলে ত্রিপুরার মানুষ খুবই উপকৃত হবেন। এদিন প্রস্তাবিত জমি পরিদর্শন কালে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন সংশ্লিষ্ট দপ্তরের পদস্থ আধিকারিকগণ। জমিটি ঘুরে দেখে সন্তোষ ব্যক্ত করেন মুখ্যমন্ত্রী।

বাংলাদেশ ভিসা অফিস ভাঙচুর! উদ্বিগ্ন বিদেশ মন্ত্রক, রাজ্য সরকারের কাছে রিপোর্ট তলব!

bang


babgl


বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপর অত্যাচারের প্রতিবাদে সহকারী হাইকমিশন অফিসের সামনে বিক্ষোভ। সোমবার সনাতনীদের কর্মসূচিতে শামিল রাজ্যের বেশ কয়েকজন শাসক শিবিরের নেতা নেত্রী। জমায়েত থেকেই ওপারের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান মহম্মদ ইউনুসকে হুঁশিয়ারিও দিলেন তারা। সীমান্তে বাণিজ্য বন্ধ সহ বাংলাদেশের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করার ডাক দিলেন সনাতনী নেতারা। সনাতনী হিন্দু সংগঠনের ডাকে এদিন অরাজনৈতিক সংগঠনের ব্যানারে এই বিক্ষোভ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছিল। সেখান থেকে হিন্দুদের জোট বাঁধার ডাক দেওয়া হয় । এর পর হাতে জাতীয় পতাকা নিয়ে জয় শ্রীরাম ধ্বনি দিয়ে ভিসা অফিস তথা সহকারি হাইকমিশন অফিসের দিকে রওয়ানা হন সনাতনীরা। সকাল থেকেই এই চত্বরে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন প্রচুর মানুষ।

বাংলাদেশের সনাতনি ধর্মগুরু চিন্ময় প্রভুর গ্রেপ্তারের প্রতিবাদ জানিয়ে এবং সে দেশে সংখ্যালঘুদের উপর আক্রমণের নিন্দা জানিয়ে গত কদিন ধরে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ, প্রতিবাদ চলছে। কোথাও মশাল মিছিল, কোথাও বাংলাদেশের তত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান ডঃ ইউনুসের কুশপুত্তলিকা পুড়িয়ে প্রতিবাদ জানানো হচ্ছে। কিন্তু কোথাও প্রতিবাদকে ঘিরে কোন হিংসাত্মক ঘটনা ঘটে নি৷ কিন্তু সোমবার ভিসা অফিস আক্রান্ত হওয়ার ঘটনায় উদ্বেগ ছড়িয়েছে৷ কেউ কেউ এর পেছনে ষড়যন্ত্র রয়েছে বলে মনে করছেন। ঘোলা জলে মাছ ধরার চেষ্টা করছে। আবার এইসব ষড়যন্ত্রকারীরা বাংলাদেশের সাম্প্রতিক ঘটনাবলীর পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্যের সংখ্যালঘু এলাকাতে আতঙ্ক কায়েম করার চেষ্টা করছে বলে খবর। সোমবার ভিসা অফিস ভাঙচুরের ঘটনায় উদ্বিগ্ন বিদেশ মন্ত্রক। রাজ্য সরকারের কাছে রিপোর্ট চাইলো কেন্দ্র।

পরিবহনমন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরীও সাংবাদিক সম্মেলনে এ বিষয়ে কোন মন্তব্য করতে রাজি হন নি৷ বিষয়টি স্পর্শকাতর বলে এড়িয়ে গেছেন৷ কেন্দ্রীয় বিদেশ মন্ত্রক থেকে সোমবার সন্ধ্যায় বিবৃতি জারি করেছে৷ বিদেশ মন্ত্রক বলেছে, আগরতলায় বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশন অফিসে ভাঙচুরের ঘটনাটি গভীরভাবে দুঃখজনক। কূটনৈতিক এবং কনস্যুলার সম্পত্তি কোনো অবস্থাতেই লক্ষ্যবস্তু করা উচিত নয়। নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশন এবং দেশে তাদের ডেপুটি/সহকারী হাইকমিশনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করার জন্য সরকার ব্যবস্থা নিচ্ছে বলে জানানো হয়েছে।

সোমবার বাংলাদেশ ভিসা অফিসের সামনে বিক্ষোভ দেখায় সনাতনীরা৷ হিন্দু সংঘ সমিতির তরফ থেকে আগরতলা বাংলাদেশ সহকারি হাই কমিশনার অফিসের সামনে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন তারা৷ প্রথম দিকে শান্তিপুর্নভাবে চলছিল প্রতিবাদ কর্মসূচি। যদিও কর্মসূতির কারণে আজ শহরবাসীদের নাকাল হতে হয়েছে। বিমানবন্দর থেকে সার্কিট হাউস হয়ে শহরে প্রবেশ করার রাস্তা ঘুরিয়ে দেওয়া হয়েছে। যেদিকে যাওয়া যায় সেদিকেই ট্রাফিক জামে নাকাল হয়েছেন সাধারণ মানুষ। ভিআইপি রাস্তা দখল করে এভাবে দীর্ঘ সময় ধরে কর্মসূচি চললেও পুলিশ কর্মীরা ছিলেন নিরব দর্শক। রোগী নিয়ে যাওয়া অ্যাম্বুলেন্স চালকদের পর্যন্ত নাকাল হতে হয়েছে। শান্তিপূর্ণভাবে চলা এই আন্দোলন হঠাৎ করে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। কর্মসূচিতে যোগ দিতে আসা বেশ কিছু উৎসাহী সনাতনী হঠাৎ করে ক্ষিপ্ত হয়ে ছুটে যায় ভিসা অফিসের দিকে। বাংলাদেশ সরকারি হাইকমিশন অফিস আক্রান্ত হয়। শহরের মানুষের বক্তব্য তা কোনভাবেই কাম্য ছিল না।

বিক্ষোভ থেকে হঠাৎ করে একদল অতি উৎসাহী মানুষ দল বেঁধে বাংলাদেশ ভিসা অফিসে গিয়ে হামলা চালায়। ভিসা অফিসে সে দেশের জাতীয় পতাকা নামিয়ে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। অথচ এই বিক্ষোভ কর্মসূচিতে ব্যাপক সংখ্যায় পুলিশকর্মীরাও উপস্থিত ছিলেন। কঠোর নিরাপত্তার চাদরে মুড়ি ফেলা হয়েছিল গোটা এলাকা। অপ্রীতিকর ঘটনা যাতে না ঘটে তার দিকে পুলিশের নজরদারি ছিল কিন্তু তারপরেও কি করে ভিসা অফিসে গিয়ে একদল উৎসাহী মানুষ আক্রমণ করল তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। যদিও পরবর্তী সময়ে ভিসা অফিসের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। প্রশ্ন হলো পুলিশের সামনে কি করে উন্মত্ত জনতা ভাঙচুর করার সাহস পেলো৷ কেন পুলিশ বা টিএসআর জওয়ানরা তাদের গতি রোধ করলো না৷ ভিসা অফিসের সামনের বারান্দায় ফুলের বাগান নষ্ট করে ফেলে উন্মত্ত জনতা। ফুলের টব ভেঙে ফেলে। ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করেছিল কিছু উৎসাহী জনতা। পরে অবশ্য নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।

india bangladesh

ত্রিপুরা থেকে কলকাতা যাওয়ার পথে বাংলাদেশের ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিশ্বরোডে আক্রান্ত হয়েছে শ্যামলী পরিবহনের একটি বাস গাড়ি। এই ঘটনায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েন গাড়িতে থাকা ভারতীয় যাত্রীরা। ঘটনাটি সামাজিক মাধ্যমে জানিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী। জানান, বাসটি বিশ্বরোডের এক পাস ধরেই যাচ্ছিলো। হঠাৎ বাসটিকে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে দুর্ঘটনার কবলে ফেলার জন্য ধাক্কা দেয় পণ্যবাহী একটি ট্রাক। একই সময়ে রাস্তায় থাকা একটি অটো বাসের সামনে চলে আসে এবং শ্যামলী বাসটির সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। এই ঘটনার পর স্থানীয় লোকজন বাসে থাকা ভারতীয় যাত্রীদের ক্রমাগত হুমকি দিতে থাকে। তাদের সামনেই ভারত বিরোধী নানা স্লোগান দেয় এবং কটু মন্তব্য করে যাত্রীদের প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়। এই ঘটনায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েন বাসে থাকা ভারতীয় যাত্রীরা। পর্যটন মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী, এই ঘটনার তীব্র নিন্দা ও ধিক্কার জানিয়েছেন এবং বাসে থাকা ভারতীয় যাত্রীদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার জন্য সেদেশের প্রশাসনকে দ্রুত হস্তক্ষেপ গ্রহণ করার আহ্বান জানিয়েছেন।

 

ea9c495c d534 4e6d ae4c ded9e5e81f0d 1

খোয়াই নদী স্থিত চাকমাঘাটের বাঁধের পার বাঁধানো সিঁড়ি থেকে পরে মর্মান্তিক মৃত্যু হয় এক ব্যক্তির! মৃত ব্যক্তির নাম নেপাল দেবনাথ(৪৮)। ঘটনা, শুক্রবার গভীর রাতে তেলিয়ামুড়া থানাধীন চাকমাঘাট এলাকায়। পরিবারের লোকজনদের বক্তব্য অনুযায়ী খবরে প্রকাশ, মৃত নেপাল দেবনাথ নাকি অধিকাংশ সময় নেশাগ্রস্থ অবস্থায় থাকতো। শুক্রবার রাতেও নাকি নেপাল দেবনাথ নেশাগ্রস্ত অবস্থায় চাকমাঘাট এলাকায় ঘোরাঘুরি করছিল। স্থানীয় লোকজনদের প্রাথমিক ধারণা, হয়তো অতিরিক্ত নেশাগ্রস্থ অবস্থায় থাকার ফলে সিঁড়ি থেকে নিচে পড়ে যায় নেপাল দেবনাথ। আর এতেই মর্মান্তিক মৃত্যু হয় নেপাল দেবনাথের। এলাকার লোকজন তৎক্ষণাৎ ঘটনার খবর পাঠায় তেলিয়ামুড়া অগ্নি নির্বাপক দপ্তরের কর্মীদের, ঘটনার খবর পেয়ে তেলিয়ামুড়া অগ্নি নির্বাপক দপ্তরের কর্মীরা তড়িঘড়ি ঘটনাস্থলে পৌঁছে নেপাল দেবনাথের দেহ উদ্ধার করে নিয়ে আসে তেলিয়ামুড়া মহকুমা হাসপাতালে। সেখানে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক নেপাল দেবনাথকে মৃত বলে ঘোষণা করে দেয়। পরবর্তীতে শনিবার দুপুরে পুলিশের উপস্থিতিতে নেপাল দেবনাথের মৃতদেহের ময়নাতদন্ত করা হয় তেলিয়ামুড়া মহকুমা হাসপাতালের মর্গে। শুক্রবার রাতের এই ঘটনার জেরে গোটা চাকমাঘাট সহ এর আশপাশ এলাকায় ব্যাপক শোকের আবহ বিরাজ করছে।।


lone 1

আগরতলা শহরের স্ট্রিট ভেন্ডারদের আত্মনির্ভরশীল করতে তাদের ঋন প্রদানের উদ্যোগ নিয়েছে পুর নিগম। ১৪১৭ জন স্ট্রিট ভেন্ডারকে এখন পর্যন্ত ঋন প্রদান করা হয়েছে। কোভিড- মহামারিতে ভারতবর্ষের বিভিন্ন রাজ্যে স্ট্রীট ভেন্ডররা আর্থিকভাবে বিশেষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। তাদের কথা চিন্তা করে প্রধানমন্ত্রী পিএম স্বনিধি যোজনা নামে একটি স্কীম চালু করা হয়।

ভেন্ডরদের আর্থিক মানোন্নয়নের লক্ষ্যে এই প্রকল্প চালু করা হয়েছে । এই স্কীমে স্ট্রীট ভেন্ডরদের দশ হাজার টাকা জামানত মুক্ত ঋণ দেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। সেই টাকা এক বছরের মধ্যে ফেরত দিলে পরবর্তীতে কুড়ি হাজার টাকা ঋণ দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। এভাবে পঞ্চাশ হাজার টাকা পর্যন্ত ঋণ দেওয়ার সংস্থান রয়েছে এই স্কীমে।গত ১৮ নভেম্বর থেকে ২রা ডিসেম্বর পর্যন্ত ‘স্ব-নিধি ভি স্বভিমান ভি পখোয়ারা’ এর পক্ষকাল ব্যাপী প্রচারনা অভিযানের অঙ্গ হিসেবে আগরতলা পুর নিগমের পূর্ব জোনাল অফিসে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে স্ট্রীট ভেন্ডরদের হাতে চেক তুলে দেন মেয়র দীপক মজুমদার। উপস্থিত ছিলেন পূর্ব জোনের চেয়ারম্যান কর্পোরেটর সুখময় সাহা সহ পূর্ব জোনের অন্যান্য কর্পুরেটরগন।

এই ঋণ প্রদানের পাশাপাশি স্ট্রীট ভেন্ডরদের জন্য স্বাস্থ্য শিবিরের ও আয়োজন করা হয়। মেয়র দীপক মজুমদার বলেন, প্রধানমন্ত্রীর চিন্তাধারা কে মান্যতা দিয়ে আগরতলা পুর নিগম এলাকার স্ট্রীট ভেন্ডরদের আর্থিকভাবে আত্মনির্ভর করার লক্ষ্যে জামানত মুক্ত ঋণ দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে । রাজ্য সরকারের ঐকান্তিক ইচ্ছা সকলকে আত্মনির্ভর করার। শুধুমাত্র শহরাঞ্চলের স্ট্রীট ভেন্ডরদেরই নয়, পুর এলাকার প্রতিটি ভেন্ডারকেই এই সুযোগ প্রদান করা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত পুর নিগম এলাকায় ১৪১৭ জন স্ট্রীট ভেন্ডরকে ১০ হাজার টাকা করে ঋণ প্রদান করা হয়েছে। ৪৪৮ জনকে কুড়ি হাজার টাকা করে ঋণ দেওয়া হয়েছে এবং ১১৩ জনকে পঞ্চাশ হাজার টাকা করে প্রদান করা হয়েছে। পাশাপাশি তিনি সময় মতো ঋণ পরিশোধ করার উপর গুরুত্ব দেন।