মাতা

মাতা ত্রিপুরেশ্বরী মন্দিরে সক্রিয় দুষ্ট চক্র!

মাতা ত্রিপুরা সুন্দরী মন্দিরকে কলঙ্কিত করার চেষ্টা..?

লোভের বশবর্তী হয়ে ধর্মপ্রাণ মানুষের ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত আনার চেষ্টা করছে একটা দুষ্টচক্র, সাথে জড়িত মন্দিরের পুরোহিতরাও। ঐতিহ্যবাহী মাতা ত্রিপুরা সুন্দরী মন্দিরের গরিমা আজ কলঙ্কিত! তাও আবার মন্দিরে নিয়োজিত পুরোহিত কর্তৃক। যা ধর্মপ্রাণ মানুষ কিছুতেই মেনে নিতে পারছে না।

মন্দিরে নিয়োজিত পুরোহিতের অতিরিক্ত লোভের কারণে ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত এক জনজাতি পরিবারের। ঘটনা মাতা সুন্দরী মন্দিরের বলি গৃহে। ঘটনার বিবরণে জানা যায় রবিবার এক জনজাতি পরিবার তার পারিবারিক সমস্যায় মাতা ত্রিপুরা সুন্দরীর কাছে মানত করেছেন যে একজোড়া পাঁঠা মন্দিরে নিয়োজিত পুরোহিত কর্তৃক মায়ের নামে উৎসর্গকৃত করে মন্দির চত্বরে ছেড়ে দেবেন। এই পর্যন্ত সবকিছুই ঠিকঠাক ছিল। ব্যাঘাত ঘটে পুরোহিত কর্তৃক জোড়া পাঁঠা উৎসর্গ করে, সেই পুরোহিত নিজের হাত থেকে জোড়া পাঁঠা ছাড়তে চাইছিলেন না। এমনকি ওই জোড়া পাঁঠা সেই পুরোহিতের নিজের পছন্দের নির্দিষ্ট জায়গায় বেঁধে রেখেছেন বলে প্রত্যক্ষদর্শীদের অভিমত।

যে জনজাতি পরিবার জোড়া পাঁঠা মন্দির চত্বরে ছেড়ে দেবেন বলে এনেছিলেন তাদের অনেক আকুতি মিনতির পরও পাঁঠা জোড়া আর ছাড়া হয়নি বলে অভিযোগ মন্দিরের তিন পুরোহিত তিমির চক্রবর্তী, বিজন চক্রবর্তী ও সঞ্জয় চক্রবর্তী-র বিরুদ্ধে। অবশেষে এক প্রকার বাধ্য হয়েই ওই জনজাতি পরিবার মন্দিরের অফিস গৃহে গিয়ে পুরো ঘটনাটি খুলে বলেন। পরে শোনা যায় অফিসের হস্তক্ষেপে পাঁঠা ছেড়ে দেওয়া হয়।ত্যক্ষদর্শীদের অভিযোগ ওই পুরোহিত এরই মধ্যে কয়েকজন পাঁঠা বেপারীকে খবর দেন পাঁঠা খরিদ করার জন্য। মন্দিরে উপস্থিত ধর্মপ্রাণ মানুষ যখন চেপে ধরেন ওই পুরোহিতকে তিনি বলেন “মন্দির চত্বরে ছাড়া যাবে না” সেটা ওনার পছন্দের জায়গায় উনার হাত দিয়ে ছাড়তে হবে এটাই নাকি মন্দিরের নিয়ম। এ ব্যাপারে মন্দিরের ম্যানেজার বাবুর সঙ্গে কথা বললে উনি জানান অনেকদিন ধরেই পাঁঠা নিয়ে এই অরাজকতা চলে আসছে। এ ব্যাপারে উনার কাছে খবর আছে কিন্তু কেউ কোন অভিযোগ করেনি বলে উনি এতদিন এর কোনো বিহিত  করতে পারেননি। আজকে প্রথম জনজাতি পরিবারটি অভিযোগ করাতে ঘটনাটা স্পষ্ট হলো।আর উৎসর্গকৃত জোড়া পাঁঠা মন্দিরের নিয়োজিত পুরোহিতের পছন্দের নির্দিষ্ট স্থানে ছাড়তে হবে এমন কোন আইন নেই। যিনি উৎসর্গ করবেন উনার ইচ্ছাতেই সবকিছু হয়। ম্যানেজারবাবু আরো বলেন এ ব্যাপারে মন্দিরের সেবাইত জেলা শাসককে সবকিছু জানানো হবে বিস্তারিতভাবে।

গত কয়েক মাস আগে মন্দিরের বলি গৃহের সামনাকে মাংসের বাজারে পরিণত করেছিল কিছুসংখ্যক টলুয়া। খবরের জেরে তা বন্ধ হয়েছিল কিছু সময়ের জন্য। বর্তমানে বলি গৃহকে পাঁঠা বাজারে পরিণত করতে চাইছে মন্দিরে নিয়োজিত একাংশ পুরোহিত। কোন এক অজ্ঞাত কারনে মন্দিরের ট্রাস্ট কমিটি একেবারে চুপ, এই নিয়ে সর্বত্র চলছে চরম গুঞ্জন। পুরোহিত কর্তৃক মন্দিরের ভিতরে এই অরাজকতা সাধারণ ধর্মপ্রাণ মানুষ কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না  ফলে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি উঠছে।