জাতিসংঘ সেই পুরানো দালালের ভূমিকায়

জাতিসংঘ সেই পুরানো দালালের ভূমিকায়!

পহেলগাঁও সন্ত্রাসী হামলায় চীনের প্রভাবে সত্য আড়ালের চেষ্টা জাতিসংঘের!

জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁও এলাকায় পর্যটকদের ওপর বর্বরোচিত সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহত এবং বহু আহত হওয়ার ঘটনায় জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ (UNSC) আনুষ্ঠানিকভাবে নিন্দা জানালেও, তাদের ভূমিকা নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে ব্যাপক ক্ষোভ ও প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, চীন ও পাকিস্তানের প্রভাবে জাতিসংঘ সত্য গোপন করেছে এবং সন্ত্রাসী দেশের নাম প্রকাশ না করে ঘটনাকে ইচ্ছাকৃতভাবে হালকা করে উপস্থাপন করেছে।

UNSC-র বিবৃতিতে কেবলমাত্র বলা হয়েছে, “কিছু সশস্ত্র ব্যক্তি” হামলা চালিয়েছে। তবে সেখানে কোনো সন্ত্রাসী সংগঠনের নাম কিংবা হামলার পেছনে থাকা রাষ্ট্রের উল্লেখ করা হয়নি। এমনকি পরিষদ পরিষ্কারভাবে উল্লেখ করেনি যে, পহেলগাঁও ভারতের সাংবিধানিক অন্তর্ভুক্ত অঞ্চল। এই ধরণের দায়িত্বজ্ঞানহীন ভূমিকা আন্তর্জাতিক সংগঠনের নিরপেক্ষতা নিয়ে বড় প্রশ্ন তুলেছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, জাতিসংঘের এই আচরণ প্রমাণ করে যে, UNSC আজ চীনের প্রভাবে পরিচালিত একটি দালাল সংগঠনে পরিণত হয়েছে।

বর্তমানে UNSC-তে রয়েছে ৫টি স্থায়ী সদস্য (আমেরিকা, রাশিয়া, চীন, ব্রিটেন ও ফ্রান্স) এবং ১০টি অস্থায়ী সদস্য। হামলার পর আমেরিকা পাকিস্তানের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নিলেও, চীন ও পাকিস্তান যৌথভাবে নিরাপত্তা পরিষদের আলোচনায় এমন চাপ তৈরি করে যে, হামলার দায়ভার স্পষ্টভাবে পাকিস্তানের ওপর আরোপ করা যায়নি। বিশ্লেষকদের মতে, চীনের অনুপ্রেরণাতেই নিরাপত্তা পরিষদের বিবৃতি এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে যাতে পাকিস্তানকে আন্তর্জাতিকভাবে বাঁচিয়ে রাখা যায়। পাকিস্তান বহুদিন ধরেই বিশ্বের সন্ত্রাসের আঁতুড়ঘর হিসেবে অভিযুক্ত হলেও, UNSC-র পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ সেই বাস্তবতাকে আড়াল করে যাচ্ছে।

UNSC-র মুখপাত্র স্টিফেন ডুজাররিক নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, “আমরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। ভারত ও পাকিস্তান উভয়কেই আমরা সর্বোচ্চ সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানাচ্ছি।”
তিনি আরও জানান, “আমরা এই আক্রমণের তীব্র নিন্দা করি এবং আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করি।” কিন্তু ডুজাররিকের বক্তব্যেও লক্ষ্য করা গেছে, তিনি হামলায় জড়িত সন্ত্রাসী সংগঠনের নাম উল্লেখ করেননি। কোনো দেশের বিরুদ্ধে সরাসরি কিছু বলেননি। বরং দুই দেশ, ভারত এবং পাকিস্তানকে সমানভাবে সংযম দেখানোর পরামর্শ দিয়ে মূল দায়িত্বকে ঝাপসা করে তোলার চেষ্টা করেছেন। বিশ্লেষকরা বলছেন, ডুজাররিকের এই বক্তব্যও প্রমাণ করে যে, জাতিসংঘের পুরো প্রতিক্রিয়া একটি পরিকল্পিত পক্ষপাতের ফলাফল। হামলার আসল দায়ীদের নাম না নিয়ে, বরং দুই দেশের মধ্যে ভারসাম্য রাখার প্রচেষ্টা করে UNSC চরম দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিয়েছে।

জাতিসংঘের এই পক্ষপাতের ঘটনা নতুন নয়। কোভিড-১৯ মহামারীর সময়ও, জাতিসংঘ চীনের পক্ষ নিয়ে কাজ করেছিল। বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঐ সময় প্রকাশ্যে বলেছিলেন, “কোভিড ভাইরাস প্রথম চীনের উহান শহর থেকে ছড়িয়ে পড়লেও, জাতিসংঘ কখনো চীনকে দোষারোপ করেনি। বরং চীনের স্বার্থ রক্ষায় সক্রিয় ভূমিকা নিয়েছে।” আজকের পহেলগাঁও হামলার ঘটনাতেও সেই একই চিত্র দেখা যাচ্ছে। চীনের প্রভাবে পাকিস্তানের নাম আড়াল করে মূল সত্যকে লঘু করা হয়েছে।

বিশ্বজুড়ে আজ প্রশ্ন উঠছে — “যদি জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ চীনের প্রভাবেই চলে এবং পাকিস্তানের মতো সন্ত্রাসী রাষ্ট্রকে রক্ষা করতে থাকে, তবে এ সংগঠনের কার্যকারিতা কোথায়?” ভারতের নাগরিকরা মনে করছেন, জাতিসংঘ যদি এভাবে চামচাগিরি চালিয়ে যায়, তবে আন্তর্জাতিক শান্তির স্বপ্ন চিরতরে ভেঙে যাবে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, “সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে সুস্পষ্ট অবস্থান ছাড়া, এবং প্রকৃত দোষীদের শাস্তি না দিয়ে, নিরাপত্তা পরিষদের সমস্ত কর্মকাণ্ড শুধুই প্রহসন।”

বিশ্বশান্তি বজায় রাখার জন্য প্রতিষ্ঠিত সংগঠন যদি নিজেই দায়িত্বজ্ঞানহীন এবং পক্ষপাতদুষ্ট হয়, তাহলে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা কোথায় থাকবে? পহেলগাঁওর এই নৃশংস হামলার প্রকৃত দোষীদের প্রকাশ্যে এনে যথোপযুক্ত শাস্তি না দিলে, আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা আরও বড় হুমকির মুখে পড়বে বলে মত বিশ্লেষকদের। বিশ্ববাসীর সরাসরি প্রশ্ন — “জাতিসংঘ কি তবে এখন চীনের হাতের পুতুল এবং সন্ত্রাসী পাকিস্তানের রক্ষাকর্তা?”About Us