ত্রিপুরাকে উগ্রপন্থার মাধ্যমে অশান্ত করার পরিকল্পনা!
ত্রিপুরায় নতুন করে উগ্রপন্থা ছড়ানোর চেষ্টা করলে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না বলে কড়া হুঁশিয়ারি দিলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা। বুধবার পশ্চিম ত্রিপুরার জিরানিয়া মোটরস্ট্যান্ড কমপ্লেক্সে ৪০.৫৮ কোটি টাকার পাঁচটি নতুন পরিবহন প্রকল্পের শিলান্যাস এবং একটি প্রকল্পের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আমাদের কাছে সুনির্দিষ্ট তথ্য রয়েছে, কেউ কেউ ত্রিপুরায় আবার উগ্রপন্থা সৃষ্টির চেষ্টা করছে। আমি তাদের হুঁশিয়ারি দিয়ে বলতে চাই, এবার কিন্তু কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। অনেক পরিশ্রমের পর রাজ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তাই কেউ এই শান্তি বিঘ্নিত করার চেষ্টা করলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ডাঃ সাহা জানান, “ত্রিপুরা এখন উগ্রপন্থা মুক্ত রাজ্য। এটিটিএফ এবং এনএলএফটি বৈরী গোষ্ঠীর সঙ্গে মৌ স্বাক্ষরের মাধ্যমে তারা মূল স্রোতে ফিরে এসেছে। অতীতে রাজ্যে অরাজকতা এবং সন্ত্রাসের যে পরিবেশ ছিল, তা দূর করতে আমরা সফল হয়েছি। তাই এবার কেউ উগ্রপন্থার বীজ বপনের চেষ্টা করলে কঠোরতম পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।” তিনি আরও বলেন, “ত্রিপুরায় উগ্রপন্থা দমনের মাধ্যমে যে শান্তি ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, তা রক্ষা করার জন্য সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা চাই রাজ্যের সর্বাঙ্গীণ উন্নয়ন ও সুস্থ পরিবেশ বজায় রাখতে।”
কমিউনিস্ট শাসনের সময় রাজ্যে অরাজকতা এবং সন্ত্রাসের পরিবেশ ছিল উল্লেখ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আগে নির্বাচনের আগে এবং পরে সন্ত্রাসের ঘটনা ঘটত। কিন্তু এখন রাজ্যে স্থিতিশীলতা এসেছে। আমরা কখনও সেই পুরনো অশান্ত পরিবেশে ফিরতে দেব না।” মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আমরা চাই এক ত্রিপুরা, শ্রেষ্ঠ ত্রিপুরা গড়ে তুলতে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে ত্রিপুরা দ্রুত উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাচ্ছে। রাজ্যে ছয়টি জাতীয় সড়ক নির্মাণের ফলে যোগাযোগ ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন এসেছে।”
পরিবহন দপ্তরের উদ্যোগে মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ মানিক সাহা মোট ৪০.৫৮ কোটি টাকার পাঁচটি নতুন পরিবহন প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন এবং একটি প্রকল্পের উদ্বোধন করেন। নতুন প্রকল্পগুলির মধ্যে রয়েছে –
- জিরানিয়া মোটরস্ট্যান্ড
- জোলাইবাড়ি মোটরস্ট্যান্ড
- মেলাঘর মোটরস্ট্যান্ড
- তেলিয়ামুড়া, খোয়াই জেলার জেলা পরিবহন অফিস
- শান্তিরবাজার, দক্ষিণ ত্রিপুরার জেলা পরিবহন অফিস
এছাড়া ভার্চুয়ালি উদ্বোধন করা হয় খোয়াই জেলার পুরান বাজারের ইন্টিগ্রেটেড পার্কিং কমপ্লেক্স। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পরিবহন মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী, জিরানিয়া নগর পঞ্চায়েতের চেয়ারম্যান রতন কুমার দাস, পরিবহন দপ্তরের সচিব সি কে জমাতিয়া, পরিবহন দপ্তরের কমিশনার সুব্রত চৌধুরী সহ অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ।
ত্রিপুরায় নতুন করে উগ্রপন্থা সৃষ্টির চেষ্টা কঠোরভাবে দমন করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা। শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সরকার কঠোর অবস্থানে রয়েছে। উন্নয়নের পথে অগ্রসর হতে ত্রিপুরাকে উগ্রপন্থা মুক্ত রাখাও এখন সরকারের মূল লক্ষ্য।